বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর কাছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত পেশাজীবীদের নেতৃত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাইক্রোসফট, গুগল, নকিয়া, অ্যাডোবির মতো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ পদ এখন ভারতীয়দের দখলে। ভবিষ্যতে এর পরিমাণ আরো বাড়তে পারে বলে প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের ধারণা। বিশ্বের শীর্ষ ১০ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা। টাইমস অব ইন্ডিয়া প্রযুক্তি বিশ্বের শীর্ষ ১০ ভারতীয় সিইও`কে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। চলুন জেনে নেয়া যাক এই দশ ভারতীয় সম্পর্কে।সুন্দর পিচাইসম্প্রতি ভারতীয় বংশোদ্ভূত সুন্দর পিচাই প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল প্রধানের দায়িত্ব পেয়েছেন। ২০০৪ সালে গুগলে যোগ দেয়া পিচাই এর আগে ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন। ভারতের চেন্নাইয়ে ১৯৭২ সালে জন্ম সুন্দর পিচাইয়ের। ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি খড়কপুর থেকে প্রযুক্তি বিষয়ে স্নাতক শেষ করেন সুন্দর পিচাই। এরপর যুক্তরাষ্ট্রে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএস (মাস্টার্স অব সায়েন্স) ও ইউনিভার্সিটি অব পেনিসিলভানিয়ার হোয়ার্টন স্কুল থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। সত্য নাদেলা, মাইক্রোসফটভারতের হায়দারাবাদে জন্ম নেয়া সত্য নাদেলা ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে কম্পিউটার প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। এর আগে নাদেলা মাইক্রোসফট ক্লাউড এবং এন্টারপ্রাইজ গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। মনিপাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে স্নাতক ও উইসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন নাদেলা। পরে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর করেন তিনি। রাজিব সুরি, নকিয়াভারতীয় বংশোদ্ভূত রাজিব সুরি একজন ইলেকট্রনিক এবং টেলিকম প্রকৌশলী। ১৯৯৫ সালে ফিনল্যান্ডভিত্তিক নকিয়ায় কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। ৪৭ বছর বয়সী সুরি ২০১৪ সালের এপ্রিলে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান।ভারতের মনিপল ইন্সটিটিউট থেকে স্নাতক শেষ করতে পারলেও স্নাতকোত্তর শেষ করতে পারেননি সুরি।শান্তনু নারায়ণ, অ্যাডোবিহায়দারাবাদে জন্ম নেয়া শান্তনু নারায়ণ ২০০৫ সাল থেকে কম্পিউটার সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাডোবি সিস্টেমসের সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৯৮ সালে তিনি প্রতিষ্ঠানটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ শুরু করেন। ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর শেষ করেন শান্তনু। এর আগে কম্পিউটার সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ডেল ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ম্যানেজমেন্ট উপদেষ্টা বোর্ডেও কাজ করেছেন শান্তনু। সঞ্জয় ঝা, গ্লোবাল ফাউন্ড্রিজবিহারের ভাগলপুরে জন্ম নেয়া ৫২ বছর বয়সী সঞ্জয় ঝাঁ চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাউন্ড্রিজের প্রধান হিসেবে নিয়োগ পান ২০১৪ সালে। এর আগে মটোরোলা মবিলিটি এবং কোয়ালকমের শীর্ষ পদে কাজ করেছেন তিনি। লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক শেষ করে স্ট্রথক্লিড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে থেকে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।সঞ্জয় মেহরত্রা, স্যানডিস্ক১৯৮৮ সালে ফ্ল্যাশ স্টোরেজ কোম্পানি স্যানডিস্ক প্রতিষ্ঠায় সঞ্জয় মেহরত্রা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ২০১১ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এর আগে তিনি প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং পরিচালন প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।মেহরত্রা যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। নিকেশ অরোরা, সফটব্যাংক করপোরেশন২০১৪ সালের অক্টোবরে নিকেশ অরোরা গুগল থেকে জাপানের টেলিকম অপারেটর সফটব্যাংক করপোরেশনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ পান। এর আগে তিনি প্রতিষ্ঠানটির বিনিয়োগ বিভাগের প্রধান ছিলেন। সম্মানী হিসেবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এ নির্বাহীকে সাড়ে ১৩ কোটি ডলার দিয়েছে সফটব্যাংক। অরোরা বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ সম্মানীপ্রাপ্ত সিইও।অরোরা বারানশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রযুক্তিতে স্নাতক শেষ করেন। এরপর নর্থইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর করেন।জর্জ কুরাইন, নেট অ্যাপকেরালার কট্টাইয়ানে জন্মগ্রহণ করা কুরাইন ২০১৫ সালের জুনে ডাটা ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি নেট অ্যাপের সিইওর দায়িত্ব পান। এর আগে প্রায় দুই বছর প্রতিষ্ঠানটির ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ফ্রান্সিসকো ডি সুজা, কগনিজেন্টসফটওয়ার নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে তরুণ সিইও হলেন ফ্রান্সিসকো ডি সুজা। এই প্রতিষ্ঠানটির সহ প্রতিষ্ঠাতাও তিনি। কেনিয়ায় জন্মগ্রহণ করা সুজার পিতা ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তা ছিলেন।ম্যাকাউ-এর ইস্ট এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি বিবিএ সম্পন্ন করেছেন। পিটার্সবার্গ কার্নিজাই মিলন ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। এসআইএস/এমআরআই
Advertisement