কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেছেন, ‘বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। মানুষ না খেয়ে আছে এটি শোনা যায় না। তবে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে দেশ এখনও অনেক পিছিয়ে আছে ।’
Advertisement
১৬ অক্টোবর (মঙ্গলবার) ছিল বিশ্ব খাদ্য দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি উদযাপিত হয়। এ বছর দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য, ‘কর্ম গড়ে ভবিষ্যৎ, কর্মই গড়বে ২০৩০-এ ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব’। দিবসটি উপলক্ষে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে করণীয় বিভিন্ন বিষয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে বলেন ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এখন মানুষ না খেয়ে আছে এটি শোনা যায় না। তার মানে আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা অর্জিত হয়েছে। কিন্তু নিরাপদ খাদ্যে আমরা এখনও অনেক পিছিয়ে আছি। এখনও অনেকে পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। ভেজাল খাদ্য খেয়ে মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। আমরা এখনও সবার জন্য বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করতে পারিনি। অর্থাৎ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত হয়নি। তাই আমাদের নিরাপদ ও মানসম্মত খাবার নিশ্চিত করাই বড় বিষয়। এ ক্ষেত্রে সরকার, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীসহ সবাইকে যার যার জায়গা থেকে সঠিক কাজ করতে হবে।’
ক্যাব সভাপতি বলেন, ‘২০১৩ সালের অক্টোবরে জাতীয় সংসদ নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করতে নিরাপদ খাদ্য আইন অনুমোদন করে। এরপর ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠন করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু তিন বছর পার হলেও তাদের কার্যকর কোনো ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়নি। কোনো মতো জোড়াতালি দিয়ে চলছে। আইন থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। তাই নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা আইনের প্রয়োগ না করা, ব্যবসায় অনৈতিক প্রতিযোগিতা। ব্যবসায়ীরা ইচ্ছাকৃত অথবা অসাবধনতার বসে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ভেজাল ও অস্বাস্থ্যকর খাবার সরবারহ করছে। আবার এ ক্ষেত্রে যথাযথ আইনের প্রয়োগও হচ্ছে না। ফলে সবার ক্ষেত্রে এক ধরনের উদাসীনতা কাজ করছে। এটি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’
নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে সবচেয়ে বেশি অভাব সচেতনতা উল্লেখ করে গোলাম রহমান বলেন, ‘আমরা বাড়ি ঘরেও ভেজাল খাদ্য খাচ্ছি। কাঁচা মাংসের সঙ্গে রান্না করা খাবার রাখছি। এতে নিজের অজান্তে খাবার দূষণ করছি। তাই খাদ্য নিরাপদ নিশ্চিত করতে শুধু খাদ্য কর্তৃপক্ষ নয়, মানুষকে আগে সচেতন হতে হবে।’
মানসম্মত খাবার নিশ্চিতের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বশীল হতে হবে। ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফার লোভ ও জনসচেতনতার কারণে দেশে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। তাই ভেজালমুক্ত খাবার নিশ্চিত করতে সব চেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে দেশের বড় বড় খাদ্য প্রক্রিয়াজতকরণ প্রতিষ্ঠানগুলো। তাদের সদইচ্ছায় দেশের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে পারবে।’
একই সঙ্গে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, খাদ্যে বিষাক্ত রাসায়নিকের ব্যবহার বন্ধে শুধু আইন করলেই হবে না, আইনের পূর্ণ বাস্তবায়ন ও ভোক্তা-ব্যবসায়ী সবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।’
Advertisement
এসআই/এনডিএস/এমএস