আন্তর্জাতিক

নাবালক রাজাকে ফাঁকি দিয়ে কোহিনূর ‘ছিনতাই’ করেছিল ব্রিটেন!

কোহিনূর নামে খ্যাত হীরক খণ্ডের ইতিহাস অতি দীর্ঘ এবং বর্ণাঢ্য। এর ইতিহাসের সূচনা ১৩০৪ খ্রিস্টাব্দে। প্রাচীনকালের সুন্দরী কুমারীর মতো এটিও বিভিন্ন রাজা বাদশাহ ও শাসকের হাত ঘুরে এখন স্থান পেয়েছে টাওয়ার অফ লন্ডনে। কোহিনূর শব্দটির আক্ষরিক অর্থ ‘আলোর পর্বত।’

Advertisement

এই মহামূল্যবান রত্নটির মালিকানা এখন ইংরেজদের। তবে এর উৎপত্তি কিংবা প্রকৃত মালিকানা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক আছে। কেউ বলেন, ভারতীয় রাজারা ১০৮.৯৩ ক্যারেট ওজনের এই হীরক খণ্ডটি স্বেচ্ছায় ব্রিটিশ মহারানীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। অনেকে আবার দাবি করেন, কোহিনূর জোর করে ছিনিয়ে নিয়েছে ব্রিটিশরা। এবার প্রকৃত এর সঠিক ইতিহাস দিল ভারতের প্রত্মতাত্মিক জরিপ সংস্থা।

বিশ্বের বৃহত্তম এই হীরের টুকরোটি নির্মাণশৈলী দেখলেই বোঝা যায়, এটি মুঘল আমলে তৈরি। অবিভক্ত ভারতে অনেক হাত বদলের পর ১৮৪৯ সালে মহারাজা দিলীপ সিংয়ের কাছ থেকে এই হীরাটি চলে যায় মহারানী ভিক্টোরিয়ার কাছে। এরপর থেকেই এটি টাওয়ার অফ লন্ডনে রয়েছে। কিন্তু কীভাবে এই কোহিনূর ইংরেজদের হাতে গেলো সেটাই সবচেয়ে রহস্যজনক।

সম্প্রতি রোহিত শোভ্রাওয়াল নামের এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে তথ্য অধিকার আইনের অধীনে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান। এরপর এ বিষয়ে তথ্য জানানোর জন্য প্রত্মতাত্মিক জরিপ সংস্থার কাছে তার আবেদনটি পাঠিয়ে দেয় প্রধানমন্ত্রীর দফতর। এরই প্রেক্ষিতে প্রত্মতাত্মিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, কোহিনূর নামে খ্যাত হীরক খণ্ডটি স্বেচ্ছায় ব্রিটিশ সরকারের হাতে তুলে দেয়নি ভারত। প্রতারণার মাধ্যমে সেটা হাতিয়ে নিয়েছিল ব্রিটিশরা।

Advertisement

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে, ওই হীরক খণ্ডটি পাঞ্জাবের শেষ শিখ মহারাজা দিলীপ সিংয়ের কাছে থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল ইংরেজরা। ১৮৪৯ সালে ইঙ্গ-শিখ যুদ্ধের পর মহারাজা দিলীপ সিং ও লর্ড ডালহৌসির মধ্যে লাহোর চুক্তি হয়। সেই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী কোহিনূর ইংরেজদের দেয়া হয়।

শিখদের সঙ্গে যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ বাবদ ওই কোহিনূর দাবি করেন ব্রিটিশরা। আর তাতে সম্মত হয়ে মহারাজ দিলীপ সিং কোহিনূরটি তাদেরকে দিয়ে দেন। ওই সময় তার বয়স ছিল মাত্র ৯ বছর হওয়ায় তিনি ওই হীরাটির গুরুত্ব বুঝতে পারেননি বলে জানিয়েছে প্রত্মতাত্মিক জরিপ সংস্থা। তাকে ফাঁকি দিয়েই কোহিনূরের কথা চুক্তিতে লেখা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন মহারাজা দিলীপ সিং মেমোরিয়াল ট্রাস্টের চেয়ারম্যান।

তার দাবি, কোহিনূর হাতিয়ে নিতে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিল ইংরেজরা। ভারতের প্রত্মতাত্মিক জরিপ সংস্থা বলছে, ভারত এখনও ইংরেজদের কাছ থেকে হীরক খণ্ডটি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে পাকিস্তানও নাকি সেটি ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে বলে জানায় তারা।

এসএ/এমএস

Advertisement