পড়ন্ত বিকেলে মনকে প্রফুল্ল করতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন কোনো এক নিষ্পাপ প্রকৃতির মাঝ থেকে। প্রকৃতি আপনাকে সব সময়ই দেবে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। এমন ভালোবাসায় কাটাতে পারেন একটি স্নিগ্ধ বিকেল। নগরজীবনের ব্যস্ততার ফাঁকে একটু শান্তির খোঁজে ক্ষণিকের জন্য যেতে পারেন ঢাকার কাছেই কাশফুলের বনে। বিস্তারিত জানাচ্ছেন আবু রায়হান মিকাঈল-
Advertisement
সেদিন কাশকন্যাদের ভালোবাসায় অন্যরকম মুগ্ধ হয়েছিলাম আমরা। ক্ষণিকের জন্য ভুলে গিয়েছিলাম নিজেকে। হারিয়েছিলাম প্রকৃতির শুভ্রতায় মোড়ানো এক রোমাঞ্চকর ভূবনে। ইট-পাথরের যান্ত্রিক এই শহরে প্রকৃতির এমন নিষ্পাপ সৌহার্দ একনিমিষে মুছে দেবে শত গ্লানি। তাই জীবন থেকে কিছুটা সময় প্রকৃতিকে দিন, প্রকৃতি আপনাকে রংধনুর চাদরে জড়িয়ে রাখবে।
> আরও পড়ুন- আকাশ-জল নীলে একাকার
রাজধানীর রামপুরা-বনশ্রীর আফতাবনগরের কাশবন ঘুরে এমনই অনুভূতি জেগেছে আমার মনে। পড়ন্ত বিকেলে কাছের প্রিয় মানুষগুলোর সাথে কাশবনের বাঁকে হাঁটার মুহূর্তটি ছিল শরতের শ্রেষ্ঠ উপহার। আফতাবনগর ছাড়াও খোলা বাতাস পাওয়ার আরেক জায়গা উত্তরা দিয়াবাড়ি। প্রকৃতিপ্রেমিদের ভিড় এখানে লেগেই থাকে। এদিকে বসুন্ধরা ৩০০ ফিট রাস্তার চারপাশ এখনো রয়েছে শরতের দখলে। একটু সময় নিয়ে ঢাকার এপাশ-ওপাশ তাকালেই মিলবে নয়নাভিরাম অনেক দৃশ্য।
Advertisement
আফতাবনগরে প্রকৃতির সাথে নিজেকে জড়িয়ে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করার মুহূর্তে হাজির হয় বৃষ্টির ফোঁটা। শরতভেজা ব্যাকুলতায় সেদিন বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা ছিল আশাতীত ভালোলাগার। শরতে কাশফুলের কোমল পরশ আর সাদা সাদা নরম মেঘের ফাঁক গলে মাঝে মাঝে উঁকি দেয় সোনাঝরা রোদ। পশ্চিমে হেলে পড়া সেই সূর্যের কিরণ যখন কাশফুলের ওপর পড়ে, তখন এ দুইয়ের মিথস্ক্রিয়ায় অদ্ভুত এক আভা প্রকৃতিতে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময়ে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে উপভোগ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। যত দূর চোখ যায়, দৃষ্টিজুড়ে শুধু কাশবন আর কাশবন। বিস্তীর্ণ এলাকা যেন শুভ্রতার চাদরে মোড়া এক অপরূপ সৌন্দর্যের রাজ্য।
> আরও পড়ুন- শরতের সৌন্দর্যে বিমোহিত আমরা
কাশফুলের অপরূপ সৌন্দর্য পুলকিত করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়। শ্বেত-শুভ্র কাশফুলের নরম পালকে চড়ে মেঘের দেশে হারিয়ে যেতে কার না মন চায়! নীল আকাশের নিচে সাদা কাশফুল যখন বাতাসে দুলতে থাকে তখন মনটাও যেন শরৎ প্রেমে আন্দোলিত হয়। তাই প্রকৃতির এমন প্রেম থেকে মনকে বঞ্চিত না করে আসুন আমরা প্রকৃতির সাথে মিশি। প্রকৃতি আমাদের আগলে রাখবে নিঃস্বার্থ ভালোবাসায়।
দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে রাজধানীর রামপুরা এলাকায় আসতে হবে। রামপুরা ব্রিজে নেমে একটু আগালেই আফতাবনগর। এছাড়া রামপুরার ভেতরে বনশ্রী যাওয়ার পথে অনেকগুলো ব্রিজ আছে, যেগুলো পার হয়ে আফতাবনগরে যেতে পারবেন। এছাড়া রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি নামক স্থানে যেতে চাইলে যে কোনো পরিবহনে যেতে পারবেন।
Advertisement
এসইউ/এমএস