জাতীয়

আধুনিক হচ্ছে ওসমানী বিমানবন্দর

সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দর দেশের তৃতীয় বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এ বিমানবন্দরে চলাচলকারী যাত্রী, কার্গো ও ফ্লাইটের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রেই এ বিমানবন্দরে বেড়েছে যাত্রী চলাচলের হার। বর্তমানে ১২ হাজার ১০০ বর্গমিটারের যাত্রী টার্মিনাল রয়েছে।

Advertisement

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) পক্ষ থেকে এটিকে সম্প্রসারিত করে ৩৪ হাজার ৯১৯ বর্গমিটার করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ে। ওসমানীতে কার্গো ভবন আছে মাত্র সাড়ে ৭০০ বর্গমিটারের। এটিকে ছয় হাজার ৮৯২ বর্গমিটারে উন্নীত করারও প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রস্তাবে উল্লেখিত যুক্তিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে রানওয়েতে বোয়িং ৭৭৭ ধরনের সুপরিসর বিমান কেবল সীমিত লোডে উড্ডয়ন ও অবতরণ করতে পারে। এমতাবস্থায় রানওয়েতে বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি এবং টার্মিনাল সম্প্রসারণসহ আধুনিকায়ন করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

এটিকে আধুনিক মানের বিমানবন্দরে পরিণত করতে দুই হাজার ৪৬০ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে বলে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

Advertisement

এদিকে পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্পের ব্যয়ের কিছু খাতের বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে। টার্মিনাল ভবনের ব্যয় প্রাক্কলনে ২০ কোটি টাকার অভ্যন্তরীণ ডেকোরেশন, ভাস্কর্য ও ম্যুরাল প্রভৃতি, ১৩ কোটি টাকার বিদেশি ফিটিংসসহ প্রক্ষালন কক্ষ, ৩৫ কোটি টাকার ১২০০টি লাউঞ্জ চেয়ার, ১৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে অভ্যন্তরীণ বিদ্যুতায়নের ব্যয় সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে পিইসি সভায়।

জানা গেছে, দেশের বেশির ভাগ গ্যাসফিল্ড সিলেটে হওয়ায় শিল্পায়নও বেশি হয়েছে সে অঞ্চলে। ফলে এ বিমানবন্দর দিয়ে যাত্রীর পাশাপাশি কার্গো ওঠানামা কয়েকগুণ বেড়েছে। তবে সেই তুলনায় বাড়ানো হয়নি অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা।

বেবিচকের পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সামরিক কাজে ব্যবহারের জন্য এ বিমানবন্দরটি এয়ারফিল্ড হিসেবে ব্যবহৃত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী এটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর হিসেবে পরিচালিত হতে থাকে। ধীরে ধীরে বিভিন্ন রুটে বাণিজ্যিক ফ্লাইট চলতে শুরু করে এ বিমানবন্দর থেকে। ১৯৯৮ সালে লন্ডন ফ্লাইট চালুর মাধ্যমে ওসমানী বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে রূপান্তরিত হয়। ২০০৪ সালে দুই লাখ ৪১ হাজার ৬১ জন যাত্রী এবং ১৬১ দশমিক ৮ টন কার্গো পরিবহন করা হয়, যেখানে ২০১৭ সালে বেড়ে পাঁচ লাখ ১৯ হাজার ৯৭৭ যাত্রী এবং সাত হাজার ২৬৫ দশমিক ৪৬ টন কার্গো পরিবহন হয়।

গত ১০ বছরে বিদ্যমান টার্মিনাল ভবনের ধারণক্ষমতা অতিক্রম করেছে। ২০২০ সালে ছয় লাখ ২৪ হাজার যাত্রী, তিন হাজার ৪৮৩টি ফ্লাইট এবং ১৩ হাজার ৩৫৫ টন কার্গো পরিবহন উন্নীত হবে।

Advertisement

এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সাম্প্রতিক প্রস্তাব ও পরিকল্পনা আশীর্বাদ হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল নাঈম হাসান।

তিনি জানান, কেবল ওসমানী বিমানবন্দরই নয়, পিছিয়ে থাকা সব বিমানবন্দরকে পর্যায়ক্রমে আধুনিকায়নের পরিকল্পনা রয়েছে। কক্সবাজার বিমানবন্দরের উন্নয়ন কার্যক্রম এখন দৃশ্যমান।

আরএম/এনডিএস/পিআর