জাতীয়

থেমে নেই হিযবুত তাহরীর

জঙ্গি তৎপরতার অভিযোগে নিষিদ্ধ হলেও থেমে নেই হিযবুত তাহরীর। রাজধানীসহ বিভিন্নস্থানে নানা কৌশলে দলীয় কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে সংগঠনটি। প্রতি সপ্তাহে রাজধানীর কোনো না কোনো মসজিদে জমায়েত হচ্ছে সংগঠনটির কর্মীরা। দলীয় প্রচারপত্র ও লিফলেট বিতরণ করতে দেখা যাচ্ছে হরহামেশায়। তবে পুলিশ আসার আগেই সটকে পড়ছেন তারা। গত শুক্রবার জুমার নামাজ পর রাজধানীর চারটি মসজিদে সংগঠনটির দলীয় প্রচারপত্র বিতরণের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে মিরপুর থানাধীন কল্যাণপুর শাহী মসজিদের প্রধান ফটক ও এর আশপাশ এলাকায় মুসল্লিদের মধ্যে প্রকাশ্যেই প্রচারপত্র বিলি করেছে সংগঠনটির কর্মীরা।একইভাবে মোহাম্মদপুরের মিনার মসজিদ ও পল্লবী থানাধীন ছয় নম্বর সেকশনের কাঁচা বাজার সংলগ্ন জামে মসজিদেও প্রচারপত্র ও লিফলেট বিতরণের খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে, বাড্ডায় একটি মসজিদে প্রচারপত্র বিলির সময় স্থানীয়দের ধমকে পালিয়ে যায় সংগঠনটির কর্মীরা।অনলাইনের মাধ্যমে দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে সম্মেলন করতে চায় সংগঠনটি। প্রচারপত্র ও লিফলেটে এ ধরনের  আভাস দেয়া হয়েছে। আর এ জন্য এজেন্ডা হিসেবে হিজবুত তাহরীর ঘোষণা করেছে আওয়ামী-বিএনপির অপসারণ এবং খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠার কর্মসূচি।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কল্যাণপুর শাহী মসজিদ এলাকায় জুম্মা নামাজের পর ছয়টি গলির মুখে দাঁড়িয়ে প্রচারপত্র বিলি করে হিজবুত কর্মীরা। তারা সেখানে ১০ মিনিট অবস্থান করে।  এব্যাপারে মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, জুম্মা নামাজ ঘিরে পুলিশের তৎপরতা থাকে। এধরনের খবরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে হিজবুত কর্মীরা পালিয়ে যায়। মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার মো. কাইয়ুমুজ্জামান বলেন, পুলিশ হিজবুত তাহরীরের জঙ্গিবাদী তৎপরতা বন্ধে নিয়মিত অভিযান চলচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার জুম্মা নামাজের পরই দলীয় প্রচারপত্র বিলি ও মিছিলের চেষ্টার সময় তিন কর্মীকে আটক করা হয়েছে।পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ জিয়াউজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় পল্লবী এলাকায় হিজবুত কর্মীরা ঝটিকা মিছিল ও প্রচারপত্র বিতরণের চেষ্টা করলে এসআই মুন্সি শহীদুল ইসলামের টিম অভিযান চালিয়ে তিন জনকে আটক করে। তারা হলেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন(৩৩), ইউসুফ নুরানি(২৮), এ কে এম মুস্তাফিজুর রহমান ওরফে মুহিন(২৩)।ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গি তৎপরতার অভিযোগে ২০০৯ সালের অক্টোবরে হিজবুতকে নিষিদ্ধ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কিন্তু এরপরেও প্রতিনিয়িত তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে সংগঠনটির কর্মীরা। এছাড়া প্রায় প্রতি শুক্রবার জু্ম্মা নামাজের সময় প্রকাশ্যে প্রচারপত্র বিলি করছে। এক্ষেত্রে কৌশল হিসেবে তারা বিভিন্ন এলাকায় আলাদা ভাবে কাজ করছে। কখনো ভাড়াটে টোকাই শ্রেণির যুবকদের মাধ্যমে তাদের প্রচারপত্র বিলি করে আলোচনায় সরব থাকার কৌশল নিয়েছে।সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০০০ সালে কার্যক্রম শুরু করে হিযবুত তাহরীর। ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গি তৎপরতার অভিযোগে ২০০৯ নিষিদ্ধ হওয়ার পর বিভিন্ন সময়ে সংগঠনটির অনেক নেতা-কর্মী গ্রেফতার হয়। সম্প্রতি তাদের কিছু কর্মী উগ্র জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) ও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমে (এবিটি) যোগ দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে ধরা পড়ার পর তাদের অনেক কর্মীর কাছ থেকে এসব তথ্য জানা যায়।ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে হিযবুত তাহরীর সুবিধা করতে পারছে না। তথ্য পেলেই অভিযান চালানো হচ্ছে। এছাড়া হিজবুত কর্মীদের অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন তিনি।  জেইউ/এএইচ/এমএস

Advertisement