দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং হিন্দু বাড়ির আশপাশের মুসলমানদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বাংলাদেশে সম্প্রীতির বন্ধন সুদৃঢ় হয়েছে। সব ধর্মের মানুষ এখন স্বাধীনভাবে, উৎসবের সঙ্গে, সম্মানের সঙ্গে তাদের ধর্ম পালন করছেন। ১০ বছর আগে সারাদেশে পূজামণ্ডপ ছিল ৯ হাজার। এখন সারাদেশে পূজামণ্ডপ হয়েছে ৩১ হাজার ২৭২টি। অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হওয়ার কারণে মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে।
Advertisement
সোমবার বিকেলে রাজধানীর লালবাগের ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে গিয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যান। প্রধানমন্ত্রীর আগমনের সঙ্গে সঙ্গে দেশাত্মবোধক গানের মাধ্যমে শিশুরা নেচে-গেয়ে তাকে স্বাগত জানান। এরপর প্রধানমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা এবং ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক সময় আমরা দেখেছি এই বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর আঘাত হানা হতো। পূজামণ্ডপে ভাঙচুর চালানো হতো। বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানদের ওপরও আঘাত হানা হতো। তাদের সম্পদ আত্মসাৎ করার জন্য একটি শ্রেণি সব-সময়ই চক্রান্ত করতো। কিন্তু এখন আর সেগুলো নেই। গত ১০ বছরে জঙ্গি, সন্ত্রাসের সঙ্গে সবকিছুই দমন করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, মসজিদের মাধ্যমে যেমন শিক্ষা দেয়া হচ্ছে, তেমনি মন্দিরেও শিক্ষারব্যবস্থা করা হয়েছে। সনাতন ধর্মের লোকেরা যেন প্রতিটি পূজামণ্ডপে সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণভাবে পূজা পালন করতে পারেন, সে জন্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। সারাদেশে প্রতিটি পূজামণ্ডপ পাহারা দিচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর সঙ্গে অন্য ধর্মের মানুষও সচেতন আছেন, যেন হিন্দুদের ওপর কেউ আঘাত হানতে না পারে।
Advertisement
সরকারপ্রধান বলেন, আগে হিন্দুরা তার সন্তানদের সম্পত্তি দান করতে পারতেন না। এখন মুসলমানরা যেমন ১০০ টাকা খরচে সম্পত্তি হেবা করতে পারেন হিন্দুরাও পারবেন। সে আইন আমরা করে দিয়েছি। আপনাদের ঢাকেশ্বরী মন্দিরে জমি নিয়ে যে সমস্যা ছিল সে সমস্যাও সমাধান করে দিয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, সব ধর্ম বর্ণের মানুষ এক হয়ে কাজ করতে হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশকে স্বল্পোন্নত দেশে রূপান্তর করেন। আমরা সেটাকে উন্নয়নশীল দেশের দিকে নিয়ে যাচ্ছি। এ বাংলাদেশ যেন সত্যিকারের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে পারি, মানুষকে যেন ভালো রাখতে পারি আপনারা সে আশীর্বাদ করবেন।
রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মণ্ডপে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শৈলান্দ কুমার মজুমদার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার। এ ছাড়া মিলন কান্তি দত্ত, নির্মল কুমার চ্যাটার্জি ও অ্যাডভোকেট কিশোর চন্দ্র মণ্ডল উপস্থিত ছিলেন। এফএইচএস/জেডএ/এমএস
Advertisement