বাংলাদেশ দলে তার অন্তর্ভূক্তিটাই চমক জাগানিয়া। ১৪ বছর ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলে হাত পাকিয়ে ফেলা ফজলে রাব্বি হয়তো নিজেও আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন জাতীয় দলের। হতাশায় মাঝে তো ক্রিকেট থেকেই মন উঠে গিয়েছিল। খেলা ছেড়ে ঢুকে গিয়েছিলেন চাকরিতে। সেই রাব্বিই জিম্বাবুয়ে সিরিজের দলে। শুধু দলে বললে ভুল হবে, আসন্ন সিরিজে তার অভিষেকটাও বলতে গেলে নিশ্চিত।
Advertisement
জীবন আসলেই নাটকের চেয়েও নাটকীয়! একটা সময় ক্যারিয়ার কোন দিকে নেবেন, সেটা নিয়ে দো-টানায় পড়ে গিয়েছিলেন। ক্রিকেটটায় কি আসলেই কিছু করতে পারবেন? ফজলে রাব্বির মনে সে দ্বিধা ঢুকে গিয়েছিল। খেলা ছেড়ে তাই চাকরিতে যাওয়ার মনস্থ করলেন। কিন্তু সেখানে মন টিকল না। ভাগ্যবিধাতা বোধ হয় তার জন্য বাঁধিয়ে রেখেছিলেন লাল-সবুজের জার্সিটা।
ক্যারিয়ারের এই উত্থান পতনের গল্পটা শোনাচ্ছিলেন রাব্বি। বলছিলেন, ‘আসলে খেলতে খেলতে হয় না এমন। দেখলাম, আমি সামনেও যাচ্ছি না, আমার পড়াশোনাও শেষ হয়ে যাচ্ছে। ওই সময় চিন্তা করি, অন্য কোন পেশায় যাব কি না। চিন্তা করেছিলাম খেলা ছাড়ার। কিন্তু কিছুদিন চাকরি করার পর মনকে সায় দিতে পারলাম না। মনে হল, আমি খেলা ছাড়া থাকতে পারব না। তারপর আবার চলে আসলাম, আবার খেলায় মন দিলাম।’
খেলা ছাড়ার সিদ্ধান্ত বন্ধুদের জানিয়ে দিয়েছিলেন। পরে যখন ফিরলেন, মাথা থেকে সব চাপ দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেললেন। পিছুটান যে আর ছিল না। রাব্বি যোগ করেন, ‘ওই বছর আমি আমার বন্ধুদের বলেছিলাম, আমি খেলব না। এরপর একদম খোলা মনে যখন খেলতে গিয়েছিলাম, তখন আমার মনে কোন চাপ ছিল না। শেষ পর্যন্ত পারফরম্যান্স ভালো হয়েছে। এরপর থেকেই আসলে পরিবর্তনটা শুরু, মানসিকতায় পরিবর্তন এসেছে। বুঝেছি চাপ ছাড়া খেললে ভালো খেলতে পারব। এখন ওইরকম চিন্তাই করি না খেলা নিয়ে। আমি সেটাই করার চেষ্টা করছি।’ ক্যারিয়ারের প্রথম সিরিজটাই ঘরের মাঠে, প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে। রাব্বির জন্য আন্তর্জাতিক আঙিনায় শুরুর ধাপটা এর চেয়ে স্বস্তিদায়ক আর হতে পারতো না! তবে জিম্বাবুয়ে বলেই যে বলে কয়ে উড়িয়ে দেবেন, এমন ভাবনায় বসে নেই এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার। বরং প্রতিপক্ষ কে সেটি নিয়ে নয়, নিজের সেরাটা দেয়া নিয়েই সব চিন্তা তার।
Advertisement
প্রতিপক্ষ নিয়ে রাব্বি বলেন, ‘আমার একদমই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা নেই। আমি জানি না জিম্বাবুয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া বা অন্য কোন দলের সাথে খেলছি। আমি আমার মতই খেলব, যদি সুযোগ পাই। আমি কার সাথে খেলছি, এটা বড় ব্যাপার নয়। কি খেলছি এটাই বড়।’
এমএমআর/এমএস