‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’-এর নেতৃত্বে থাকা ড. কামাল হোসেন ‘জঙ্গি-দুর্নীতিবাজ’ বিএনপির আশ্রয়ন সংস্থা বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, ‘এটা জোট নয়, এটা ঘোট। এই ঘোট পাকানোর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করতে চাচ্ছে।’
Advertisement
রোববার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে শনিবার ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’ নামে নতুন জোট গঠন করা হয়েছে। শুরু থেকে এই জোট গঠনের প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান ও বিকল্পধারা সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বাদ পড়েছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ সব রাজবন্দির মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েনসহ ৭ দফা দাবি ও ১১ দফা লক্ষ্য ঘোষণা করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
Advertisement
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবি ও ১১ লক্ষ্যের মধ্যে কিছু অমিশন আছে, কিছু কমিশন আছে। কিছু জিনিস উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কামাল হোসেন ও বিএনপির ওনারা বাদ দিয়েছেন, কিছু জিনিস উদ্দেশ্যমূলকভাবে যোগ করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘কী কী বিষয়ে এই জোট নীরব সেই বিষয়ে আমি বলব- রহস্যজনকভাবে তারা বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে দৃঢ় ঐক্যের বিষয়ে নীরব। বিএনপি রাজাকারদের সম্পর্কের ব্যাপারে নীরব। বিএনপি সব জঙ্গি সন্ত্রাস হত্যা-খুনের পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে- সেই ব্যাপারে ঐক্যফ্রন্ট নীরব। বিএনপি সংবিধানের চার নীতিকে সরাসরি অস্বীকার করে, সেই ব্যাপারেও ঐক্যফ্রন্ট নীরবতা পালন করেছে। বিএনপি সরাসরি ৩০ লাখ শহীদের ব্যাপারটিকে বিতর্কিত করেছে, সেই ব্যাপারেও নীরবতা পালন করেছে ফ্রন্ট।’
‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও স্বাধীনতার ঘোষণা সম্পর্কে বিএনপির ন্যক্কারজনক ভূমিকা সম্পর্কেও নীরবতা পালন করেছে ঐক্যফ্রন্ট।’
ঐক্যফ্রন্ট তারেক, কোকা, খালেদা জিয়ার মহাদুর্নীতির ঘটনা অমিশন বা বাদ দিয়েছেন মন্তব্য করে জাসদ সভাপতি বলেন, ‘আর কমিশন হচ্ছে, বিএনপি-জামায়াত-রাজাকার-জঙ্গি ও সব অপরাধীদের হালাল করার একটা প্রস্তাব হচ্ছে ৭ দফার প্রস্তাব। আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাতে চাচ্ছি- জঙ্গি, সন্ত্রাসবাদ, যুদ্ধাপরাধী, স্বীকৃত দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্র উদ্ধারের ঘোষণাটা হচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জাতির সঙ্গে একটা ঠাট্টা-মশকরা।’
Advertisement
‘আমি মনে করছি এই ৭ দফা দাবি ও ১১ লক্ষ্যের আড়ালে জঙ্গি-সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজদের রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনার এটা প্রকল্প। একটি অস্বাভাবিক সরকার আনার প্রস্তাব। গণতন্ত্রকে জিম্মি করে সব ধরনের অপরাধীদের মুক্ত করার, পুনর্বাসন করার, রাজনীতি করার এটা ব্যবস্থা।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি বিএনপি হচ্ছে রাজাকার-জঙ্গি জামায়াতের আশ্রয়ন প্রকল্প বা সংস্থা, আর ড. কামাল হোসেন এই জঙ্গি, সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ, স্বাধীনতাবিরোধী বিএনপির আশ্রয়ন সংস্থা হিসেবে ভূমিকা রাখা শুরু করেছেন।’
‘বিএনপি ১৯৭৫ এর পর ধারাবাহিকভাবে মুক্তিযুদ্ধের মীমাংসিত বিষয় অমীমাংসিত করেছে। বিএনপি হচ্ছে মীমাংসিত বিষয় অমীমাংসিত করার মাস্টার। একাত্তরের পর জেনারেল জিয়া যেভাবে মুক্তিযোদ্ধা-রাজাকার-খুনীদের সহাবস্থানের রাজনীতি-অপরাজনীতি অনুসরণ করেছেন এই কামাল হোসেন ও বিএনপির ঐক্য ফ্রন্ট ঠিক সেই সহাবস্থানের প্রস্তাব জাতির সামনে হাজির করলেন’ বলেন জাসদ একাংশের সভাপতি ইনু।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যে ঐক্যের যাত্রা শুরু হল এর সঙ্গে কোন সুশাসন, গণতন্ত্র, দুর্নীতিমুক্ত সমাজের কোন সম্পর্ক নেই। আমি পরিস্কার বলছি- বাংলাদেশে কোন রাজবন্দী নেই, যারা আছে সব অপরাধী। খালেদা জিয়া একজন চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ সাজাপ্রাপ্ত আসামী। তারেক একটা চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ খুনী অপরাধী।’
আরএমএম/জেএইচ/পিআর