জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে কোনো অগ্রগতি নেই। ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি মধ্যরাতে পাঁচ খুনির ফাঁসির রায় কার্যকরের পর থেকে দাবি ওঠে দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক অন্য আসামিদের দেশে ফিরে এনে রায় কার্যকর করার। সরকার প্রতি বছর পলাতক খুনিদের দেশে ফিরে আনার আশ্বাস প্রদান করলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। দণ্ডপ্রাপ্ত ছয় জনের মধ্যে দুই খুনির অবস্থান নিশ্চিত হলেও বাকি চারজনের অবস্থান সম্পর্কে সরকারের কাছে নিশ্চিত তথ্য নেই বলে বলে সূত্র জানিয়েছে। এদের মধ্যে একজন খুনি আবদুল আজিজ পাশা ২০০১ সালের ২ জুন জিম্বাবুয়েতে মারা গেছেন।জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নৃশংসভাবে খুনের পর তৎকালীন সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ‘ইনডেমনিটি অ্যাক্ট’ জারি করে এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ রুদ্ধ করা হয়। একই সঙ্গে খুনিদের বিদেশে বিভিন্ন বাংলাদেশ মিশনে চাকরি দেওয়া হয়।২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ফের ক্ষমতায় এলে ‘ইনডেমনিটি অ্যাক্ট’ বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারকাজ শুরু করে। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি আপিল বিভাগের রায়ে ১২ খুনির ফাঁসির আদেশ বহাল থাকলে কারাগারে আটক পাঁচ খুনি কর্নেল (অব.) সৈয়দ ফারুক রহমান, কর্নেল (অব.) সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, লে. কর্নেল (অব.) মহিউদ্দিন আহমদ (ল্যান্সার), মেজর (অব.) এ কে বজলুল হুদা এবং মেজর (অব.) এ কে এম মহিউদ্দিনকে (আর্টিলারি) ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। বাকি ছয় খুনির মধ্যে লে. কর্নেল এস এইচ বি নূর চৌধুরী বর্তমানে কানাডায় এবং লে. কর্নেল এ এম রাশেদ চৌধুরী বর্তমানে আমেরিকায় পলাতক। নূর চৌধুরীর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি রয়েছে। পলাতক খুনিদের মধ্যে চারজন লে. কর্নেল শরিফুল হক ডালিম, লে. কর্নেল আবদুর রশীদ, ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেহ উদ্দিনের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে সরকারের কাছে নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই বলে সূত্র জানায়। তাদের চারজনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি আছে। পলাতক খুনি শরিফুল হক ডালিমও কানাডায় অবস্থান করছেন বলে একটি অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে। অপর খুনি এম এম রাশেদ চৌধুরী আগে লন্ডনে অবস্থান করলেও বর্তমানে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায়, খন্দকার আবদুর রশীদ গাদ্দাফি সরকার থাকা পর্যন্ত লিবিয়ায় অবস্থান করলেও বর্তমানে পাকিস্তানে, রিসালদার মোসলেহ উদ্দিন থাইল্যান্ডে এবং আবদুল মাজেদ কেনিয়ায় অবস্থান করছেন বলে অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ কিউ এম মোজাম্মেল হক এ বিষয়ে জাগো নিউজকে বলেন, সরকার বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট রয়েছে। ইতোমধ্যেই ইন্টারপোলের মাধ্যমে দুই খুনির ব্যাপারে নোটিশ জারি করা হয়েছে। বাকিদের ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। এএসএস/এসকেডি/এমএস
Advertisement