একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী সদর আসনে সম্ভাব্য লড়াই হতে পারে মিজানুর রহমান মিনু ও ফজলে হোসেন বাদশার মধ্যে। বাদশা সর্বশেষ দুই মেয়াদে এই আসনের সংসদ সদস্য। এর আগে টানা তিনবার সংসদ সদস্য ছিলেন মিনু।
Advertisement
ফজলে হোসেন বাদশা ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মিত্র বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের পদে রয়েছে। বরাবরের মতো এবারও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের প্রার্থী হচ্ছে তিনি। এবারও এই আসনে তার মনোনয়ন পাকা।
সর্বশেষ গত ৯ অক্টোবর রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত ১৪ দলের জনসভার পর বিষয়টি অনেকটাই সুনিশ্চিত। সেখানে জোটের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাাসিম ঐক্য অটুট রাখতে নেতাদের হাতে হাত রেখে অঙ্গীকার করে গেছেন।
রাজশাহী-২ আসনের সঙ্গে আগে পবা উপজেলা যুক্ত ছিল। ২০০৮ সালে কেবল রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকা নিয়ে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হয়। এই আসনে নব্বই-উত্তর গণতান্ত্রিক নির্বাচনে প্রথম নৌকার জয় হয় ২০০৮ সালে। নৌকা প্রতীকে সেই জয় এনে দেন ফজলে হোসেন বাদশা। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও জোটের প্রার্থী হন তিনি। সেই বার বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন বাদশা।
Advertisement
দলীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার পর কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে বেশ প্রভাব বিস্তার করেন বাদশা। মাঝে আওয়ামী লীগের অন্তত হাফডজন নেতা মনোনয়ন দৌঁড়ে নামেন। কিন্তু নির্বাচনী জোট রক্ষায় হাইকমান্ড সবুজ সংকেত দিচ্ছে বাদশাকে। ফলে আসছে নির্বাচনে তারই নৌকার মাঝি হবার কথা।
এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য বেগম আখতার জাহান, নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা ও মাহাফুজুল আলম লোটন, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার এবং নগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলী।
এদিকে, বিএনপি একক কিংবা জোটবদ্ধভাবে আসছে নির্বাচনে গেলেও এই আসনে তাদের প্রার্থী হবেন মিজানুর রহমান মিনু। মিনু দলটির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পদে রয়েছেন। দীর্ঘদিন নগর বিএনপির সভাপতির দায়িত্বপালন করেন তিনি।
রাজশাহী-২ আসন থেকে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে পরপর দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মিজানুর রহমান মিনু। এছাড়া টানা ১৭ বছর তিনি রাজশাহী সিটি মেয়র ছিলেন।
Advertisement
নেতারা বলছেন, মিনুই পুরো উত্তরাঞ্চলে বিএনপির প্রাণ। তিনি ত্যাগী, কর্মীবান্ধব এবং সাংগঠনিকভাবে দক্ষ। রাজনৈতিক বিচক্ষণতা ও দূর-দর্শীতা তাকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। মিনুর ডাকে যেকোনো সময় হাজারো নেতাকর্মী রাস্তায় নেমে আসেন। সঙ্গত কারণেই দলীয় হাইকমান্ড তার বিকল্প খুঁজবে না।
শোনা যাচ্ছে, এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেতে চাইছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এবং রাজশাহী বিএনপির সিনিয়র নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য কবির হোসেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিজানুর রহমান মিনু বলেন, আগামী নির্বাচনে তিনিই দলের প্রার্থী হতে পারেন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে চায় বিএনপি। সেটি হলে বিএনপি কেবল রাজশাহী বিভাগ থেকে ১৮ থেকে ১৯টি আসনে বিজয়ী হবে।
অন্যদিকে, ফজলে হোসেন বাদশাও তার মনোনয়ন নিয়ে নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তার সরকার রাজশাহীর ব্যাপক উন্নয়ন ঘটিয়েছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রাখতে আসছে নির্বাচনে জনগণ আবারও নৌকায় ভোট দেবে।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এমএএস/জেআইএম