জাতীয়

রাশেদ চৌধুরীকে দ্রুত ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকরের দাবি

আজ ১৫ আগস্ট। জাতীয় শোক দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিন জাতির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান, বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ও বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা নির্মমভাবে হত্যা করেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের মধ্যে অন্যতম লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এম রাশেদ চৌধুরী।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের অবসরপ্রাপ্ত এই লেফটেন্যান্ট কর্নেল বর্তমানে আমেরিকায় আছেন। রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকার কারণে সরকার তাকে ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে জানা গেছে। চাঁদপুরবাসী তাকে দ্রুত ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন। লে. কর্নেল রাশেদ চৌধুরী ছাত্র জীবনে শান্ত প্রকৃতির থাকলেও চাকরি জীবনে গিয়ে বদলে যান। এলাকার মানুষ তাকে মেধাবী ও ভাল ছেলে হিসেবেই জানতো। যদিও মানুষ মারার হাতেখড়ি নিজ এলাকা থেকে নিয়েছিলেন রাশেদ। প্রথমে একজন মুক্তিযোদ্ধার রক্তে হাত রাঙ্গিয়ে পরে সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার মিশনে অংশ নেয়।চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার ৬ নং পূর্ব বড়কূল ইউনিয়নের সোনাইমুড়ি গ্রামের তৎকালীন মুসলীম লীগ নেতা মরহুম শিহাব উদ্দিনের ছেলে রাশেদ চৌধুরী। ৮ ভাই এক বোনের মধ্যে রাশেদ ৪র্থ। ছাত্র জীবনে আচার আচরণ ভালো ছিল। কিন্তু চাকরী জীবনে গিয়ে বদলে যান রাশেদ। জানালেন রাশেদের সহপাঠিসহ এলাকার লোকজন।  গ্রামের বাড়িতে রাশেদ চৌধুরী সবশেষ কবে এসেছেন জানেন না তার স্বজনরা। অবশ্য গ্রামের বাড়িতে তার ছোট  ভাই তোফায়েল চৌধুরী ছাড়া আর কেউই থাকে না। তার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে সাজ্জাত চৌধুরী জানালো, সে তার চাচাকে কখনো সামনাসামনি দেখেনি, এমন কী ফোনেও তার সাথে কথা হয়নি। রাশেদ বাড়ির সাথে কোন যোগাযোগ রাখে না বলে জানালো সে। রাশেদ চৌধুরীর বাবা মরহুম শিহাবউদ্দিনের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের ইউপি সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ও তৎকালীন আ. লীগ নেতা আ: লতিফ মাস্টারের একটি স্কুল নিয়ে বিরোধ ছিল। তার জের ধরে রাশেদ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার কিছুদিন আগে ওই মাস্টারকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে হত্যা করে ফেনীর ছাগলনাইয়া ব্রিজের নিচে ফেলে রেখেছিল। সেই হত্যাকাণ্ডের আজো বিচার পায়নি তার পরিবারের সদস্যরা। বাবা হত্যার বিচার চেয়েছেন মরহুম লতিফ মাষ্টারের ছেলে আহসান হাবিব। সেনাবাহিনী থেকে বহিস্কৃত ও পলাতক খুনি রাশেদ চৌধুরী হাজীগঞ্জের সোনাইমুড়ি মৌজায় ১ একর ১৫ শতক জমি  উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন। আদালতের নির্দেশে ২০১৪ সালের ২৮ এপ্রিল সেই সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে হাজীগঞ্জের উপজেলা প্রশাসন। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের অন্যতম রাশেদ চৌধুরী বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর পরই বিদেশ পাড়ি দেয়। এরপর তিনি এরশাদের শাসনামলের শেষ দিকে একবার এক দিনের জন্য গ্রামে এসেছিলেন। তবে কারো সঙ্গে কোন কথা বলেননি। বর্তমানে এই খুনি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছে। এ খুনিকে দ্রত দেশে এনে রায় কর্যাকরের দাবি চাঁদপুরবাসীর।ইকরাম চৌধুরী/এআরএস

Advertisement