যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘ সদর দফতরে ‘ইন্টারন্যাশনাল ইয়ং লিডার্স অ্যাসেম্বলি’ এর ‘গ্লোবাল সামিট’ এ অংশগ্রহণ করেছেন বাংলাদেশের দুই শিক্ষার্থী। তাসমিয়া কায়েনাত আশা ও রায়ান আফরিন নামে বাংলাদেশি দুই ছাত্রী অংশ নিয়েছেন। এ দুই শিক্ষার্থী আমেরিকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি প্রজন্মে উদ্দীপনা জাগিয়েছেন।
Advertisement
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এই সামিটে অংশ নেয়া ওই দুই ছাত্রী ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ অংশগ্রহণকারী। আশা ঢাকার উদ্দীপন বিদ্যালয় থেকে ৫ম (২০১০), ৮ম (২০১৩) ও এসএসসিতে (২০১৬) গোল্ডেন জিপিএ ফাইভ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। তিনি ঢাকা সিটি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগের (২০১৮) এইচএসসি পরীক্ষার্থী অবস্থায় গত বছর ১৫ ডিসেম্বর পরিবারের সঙ্গে ইমিগ্র্যান্ট ভিসায় নিউইয়র্কে আসেন।
এখানকার শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রথমে তাকে নবম গ্রেডে ভর্তি করতে চেয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আশার মা-বাবার অনুরোধে তার জন্যে বিশেষ একটি পরীক্ষার আয়োজন করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। চমৎকার রেজাল্ট প্রদর্শনে সক্ষম হওয়ায় তাকে একাদশ গ্রেডে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে আশা নিউইয়র্ক সিটিতে উইলিয়াম কুলেন ব্রায়ান্ট হাই স্কুলের নিয়মিত ছাত্রী ছাড়াও পিএস-৯২ তে সহকারী শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।
আশার মা ফারহানা পারভীন (সান্তনা) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন উপদেষ্টা দফতরের উপ-রেজিস্ট্রার ছিলেন। বর্তমানে তিনি ম্যানহাটানে চেট্রি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস ল’ ফার্মে কাজ করছেন।
Advertisement
আশার বাবা ঢাকার রায়ের বাজারের সন্তান আহ্সানুজ্জামান ঠাকুর (স্বপন) চেষ্টা করছেন নিউইয়র্কে সন্তানদের সুন্দর ভবিষ্যতের পথ সুগম রাখতে। প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম ঠাকুর ওরফে মুরাদ ঠাকুর হচ্ছেন আশার দাদা। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখায় অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে তার নামে একটি সড়কের ‘বীর মুক্তিযাদ্ধা মুরাদ ঠাকুর সড়ক’ নামকরণ অনুমোদিত হয়ে উন্মোচনের অপেক্ষায় রয়েছে।
জাতিসংঘের এ সামিটে অংশ নেয়া অপর বাংলাদেশি রায়ান আফরিনের বাবা মারুফুল ইসলাম, মা সাবিনা ইয়াসমিন। তারাও ২০১৫ সালে ইমিগ্র্যান্ট ভিসায় নিউইয়র্কে এসেছেন। রায়ান বাংলাদেশে এসএফএক্স গ্রিন হেরাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে পড়তেন। বর্তমানে আশা ও রায়ান একই স্কুলে একই শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।
রায়ান সব সময়ই স্কুলে প্রথম হতেন। এখানেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন অর্গানাইজেশনে প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। রায়ানের মা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা ছিলেন, বাবাও বাংলাদেশে মার্কিন অ্যাম্বাসিতে কাজ করতেন। রায়ান নিউইয়র্কের শিক্ষা সহায়ক প্রতিষ্ঠান ‘ববি তারিক’ এ কর্মরত।
আশা ও রায়ান বিশ্বসভায় প্রতিনিধিত্বমূলক বক্তব্যের মধ্য দিয়ে স্বপ্নের দেশ আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশি প্রজন্মে উদ্দীপনা জাগিয়েছেন। তাদের এই ভূমিকা শিক্ষা জীবনেই শুধু নয়, কর্মজীবনেও সাফল্য বয়ে আনবে বলে জাতিসংঘ কর্মকর্তারা মনে করছেন।
Advertisement
এমআরএম/পিআর