খেলাধুলা

খাজা-পেইনেরও উপরে নাফিস-বেলিমের বীরত্ব

সদ্য সমাপ্ত দুবাই টেস্টে অসাধারণ ব্যাটিংশৈলী ও ধৈর্য্যের চূড়ান্ত দৃষ্টান্ত দেখিয়ে পাকিস্তানের হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচ ড্র করেছে অস্ট্রেলিয়া। ট্রাভিস হেড, উসমান খাজা ও টিম পেইনদের মাটি কামড়ানো ব্যাটিংয়ে ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে ১৩৯.৫ ওভার ব্যাট করে নিশ্চিত হার এড়িয়েছে সফরকারীরা।

Advertisement

এশিয়ার মাটিতে এসে এশিয়ান প্রতিপক্ষের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে প্রায় ১৪০ ওভার ব্যাটিং করা কোনো চাট্টিখানি কথা নয়। তবে খাজা ৩০২ বল, পেইন ১৯৪ বল ও হেড ১৭৫ বল খেলে সে কাজটিই করেছেন দাঁতে দাঁত চেপে। যার ফলে অস্ট্রেলিয়ার এই কীর্তি ঠাই পেয়েছে ইতিহাসের অনন্য এক রেকর্ডের পাতায়। যে রেকর্ডের শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশের নাম।

সেটি হলো এশিয়ার মাটিতে চতুর্থ ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ওভার ব্যাট করে ম্যাচ ড্র করার রেকর্ড। তবে রেকর্ডের শীর্ষে জায়গা পায়নি খাজা-পেইনদের এ বীরত্ব। এখনও পর্যন্ত টেস্ট ইতিহাসে এশিয়ার মাটিতে হওয়া সবগুলো ম্যাচের মধ্যে চতুর্থ ইনিংসে ১৩৯.৫ ওভার ব্যাট করে ড্র করার কীর্তিটি তৃতীয় সর্বোচ্চ। দিন শেষের এক বল আগে ড্র মেনে নেয়ায় রেকর্ডের দ্বিতীয় স্থানে বসতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া।

কেননা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০০৩-০৪ মৌসুমে ম্যাচ ড্র করার পথে চতুর্থ ইনিংসে পুরো ১৪০ ওভার ব্যাটিং করেছিল ইংল্যান্ড। ক্যান্ডিতে শেষ ইনিংসে ইংলিশদের জয়ের জন্য দরকার ছিল ৩৬৮ রান। কিন্তু লঙ্কানদের বোলিং বৈচিত্রের কথা মাথায় রেখে রান তাড়ার বদলে ম্যাচ ড্রয়ের দিকেই মনোযোগ দেয় ইংলিশরা। মাইকেল ৩৩৩ বল খেলে ১০৬ রান করলে ১৪০ ওভার ব্যাট করলে ২৮৫ রান করে ম্যাচ শেষ করে ইংল্যান্ড। চতুর্থ ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ওভার ব্যাটিং করে ড্র করার রেকর্ডে এটি রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে।

Advertisement

আর এ রেকর্ডে শীর্ষের নামটি বাংলাদেশ। ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্ট ম্যাচ ও টেস্ট সিরিজ জেতার সময়ে দ্বিতীয় ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে ১৪২ ওভার ব্যাট করে ম্যাচ ড্র করেছিল বাংলাদেশ। সে ম্যাচে বাংলাদেশ দলের সামনে লক্ষ্য ছিলো ৩৭৪ রানের।

কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে মাত্র পঞ্চম বছরে থাকা বাংলাদেশ সে লক্ষ্যের দিকে না এগিয়ে, বেঁছে নেয় দেড় দিন ব্যাট করে ম্যাচ ড্র করার পথ। যেই ভাবা সেই কাজ। উদ্বোধনী জুটিতে ধৈর্য্যের চূড়ান্ত পরীক্ষা দেন দুই ওপেনার নাফিস ইকবাল ও জাভেদ ওমর বেলিম। দুজন মিলে কাটিয়ে দেন প্রায় পুরো একটি দিন।

৮৩ ওভার উইকেটে পড়ে থেকে দুজন মিলে গড়েন ১৩৩ রানের জুটি, নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ দলের ড্র। ২৫৮ বল খেলে মাত্র ৪৩ রান করেন জাভেদ ওমর। বাংলাদেশের ইতিহাসের তৎকালীন সবচেয়ে ধীরগতির সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন নাফিস ইকবাল। ৩০৯ বলে সেঞ্চুরি করা নাফিস আউট হওয়ার আগে ৩৫৫ বল খেলে করেন ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ১২১ রান।

শেষদিকে রাজিন সালেহ ১৪০ বলে ৫৭ ও খালেদ মাসুদ পাইলট ৫৭ বলে ২৮ রান করে অপরাজিত থাকলে ১৪২ ওভার খেলে ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ করে ২৮৫ রান। ড্র হয়ে যায় ম্যাচ। সিরিজের প্রথম ম্যাচ জিতে রাখায় নিজেদের ইতিহাসের প্রথমবারের মতো সিরিজটিও জেতে বাংলাদেশ।

Advertisement

এসএএস/এমএস