দেশজুড়ে

গ্রেনেড হামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত শফিকুর কোথায় জানেন না মা

২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে অন্যতম মুফতি শফিকুর রহমান।

Advertisement

তার বাড়ি ভৈরব উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের বাঁশগাড়ি পশ্চিম পাড়া গ্রামে। তার বাবার নাম মরহুম মৌলভী শিশু মিয়া। মুফতি শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় তিনটি গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।

বুধবার গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে মুফতি শফিকুর রহমানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িটি তালাবদ্ধ।

পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে পলাতক রয়েছে মুফতি শফিকুর রহমান। কোথায় আছে তাও জানা নেই পুলিশের। তবে তাকে খুঁজছে পুলিশ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার শফিকুর রহমানের বাড়িতে গেলে প্রতিবেশীরা জানান, শফিকুর প্রায় দেড়যুগ ধরে বাড়িতে আসেন না। তিনি নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের আমির ছিলেন। বর্তমানে বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন তাও কেউ জানেন না।

জানা গেছে, ১৯৯২ সালে হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ নামে ইসলামপন্হী একটি মৌলবাদী সংগঠনের জন্ম দিয়ে আলোচনায় আসেন শফিকুর। প্রাইমারি পাস করার পর স্থানীয় একটি মাদরাসায় শিক্ষাগ্রহণ করেন। এরপর চলে যান পাকিস্তানে। সেখানে কিছুদিন লেখাপড়ার পর আফগানিস্তান গিয়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে ফিরে ১৯৯২ সালে হরকাতুল জিহাদ নামের একটি জঙ্গি সংগঠন গড়ে তোলেন।

পরে জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান ও মুফতি হান্নানের সঙ্গে জড়িত হয়ে দেশে জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডে জড়ান তিনি। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার তদন্তের পর আসামি হন। বুধবার মামলার রায়ে তারেক রহমানসহ ১৯ জনের সঙ্গে তারও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ভৈরবের বাঁশগাড়ি গ্রামের মৌলভী শিশু মিয়ার ছয় ছেলের মধ্যে প্রথম মুফতি শফিকুর রহমান। বর্তমানে তার বাড়িতে বৃদ্ধ মা ও তার ছোট ভাইকে ছাড়া কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে তারাও জানেন না শফিকুর রহমান কোথায় আছেন। ছেলে বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছে জানেন না শফিকুর রহমানের মা। বর্তমানে তার থাকার ঘরটি তালাবদ্ধ।

Advertisement

মুফতি শফিকুর রহমানের প্রতিবেশী অলি উল্লাহ বলেন, দেড় যুগ আগে শফিকুরকে একবার বাড়িতে দেখেছিলাম। তারপর আর তাকে এলাকায় দেখিনি। এলাকার অনেকেই জানে না গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে তার যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে। এ ধরনের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে শফিকুর জড়িত ছিল ভাবতেই ঘৃণা হয় আমাদের।

এ বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এম কে মিলন বলেন, মুফতি শফিকুর রহমান দীর্ঘ দেড় যুগ বাড়িতে আসে না। তাদের বাড়িতে তার মা ছাড়া কেউ নেই। বাড়ির দরজা সবসময় বন্ধ থাকে।

ভৈরব থানা পুলিশের ওসি মো. মোখলেছুর রহমান বলেণ, মুফতি শফিকুর রহমানের নামে থানায় তিনটি গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পলাতক শফিকুর। একাধিকবার তার বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েও তাকে ধরা যায়নি। তবে অভিযান অব্যাহত আছে।

কিশোরঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মুফতি শফিকুর রহমানের বাড়ি ভৈরবে আমার জানা ছিল না। এখন জানতে পারলাম। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চালাবে পুলিশ। দেশের যেখানেই লুকিয়ে থাকুক তাকে খোঁজে বের করার চেষ্টা করবে পুলিশ।

আসাদুজ্জামান ফারুক/এএম/জেআইএম