# প্রথম দুই মাসে লক্ষ্যমাত্রার ৩৫ শতাংশ সঞ্চয়পত্র বিক্রি # আগস্টে নিট বিক্রি চার হাজার ২১ কোটি টাকা
Advertisement
চলতি অর্থবছরের (জুলাই-আগস্ট) প্রথম দুই মাসে ৯ হাজার ৫৭ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে, যা চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির মোট লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৩৫ শতাংশ।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের সর্বশেষ হাল নাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংক আমানতের সুদের চেয়ে এখনও দ্বিগুণ মুনাফা মিলছে সঞ্চয়পত্রে। অন্যদিকে পুঁজিবাজারে আস্থাহীনতা, ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রবণতা ও বিনিয়োগে চলছে মন্দাভাব। তাই সঞ্চয়পত্রে ঝুঁকছেন বিনিয়োগকারীরা।
Advertisement
আরও পড়ুন : পুঁজিবাজারে আসছে আইসিবির দেড় হাজার কোটি টাকা
জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টে নিট চার হাজার ২১ কোটি টাকার ঋণ এসেছে সঞ্চয়পত্র থেকে। এ সময়ে মোট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ছয় হাজার ৭৩২ কোটি টাকা।
এরমধ্যে আগের কেনা সঞ্চয়পত্রের মূল ও সুদ পরিশোধ বাবদ ব্যয় হয়েছে দুই হাজার ৭১১ কোটি টাকা। সুদ বাবদ পরিশোধ করা হয় এক হাজার ৭১৫ কোটি টাকা।
এদিকে অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে মোট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয় আট হাজার ২২৯ কোটি টাকা। ওই মাসে মূল ও মুনাফা পরিশোধে ব্যয় হয়েছে তিন হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। ফলে ওই মাসে সরকারের নিট ঋণ হয় হয়েছিল পাঁচ হাজার ৩৫ কোটি টাকা।
Advertisement
এ হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৯ হাজার ৫৭ কোটি টাকা। যা মোট লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৩৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটের ঘাটতি মেটাতে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ২৬ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।
আরও পড়ুন : আতঙ্কে সঞ্চয়পত্র কেনার হিড়িক
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধের পর যা অবশিষ্ট থাকে তাকে নিট বিক্রি বলা হয়। অর্থাৎ জাতীয় সঞ্চয় স্কিমগুলোতে বিনিয়োগকৃত অর্থের ওপর একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর মুনাফা দেয় সরকার। মেয়াদপূর্তির পরে বিনিয়োগকৃত অর্থও ফেরত দেয়া হয়। প্রতিমাসে বিক্রি হওয়া সঞ্চয় স্কিমগুলোর প্রাপ্ত বিনিয়োগের হিসাব থেকে আগে বিক্রি হওয়া স্কিমগুলোর মূল ও মুনাফা বাদ দিয়ে নিট ঋণ হিসাব করা হয়। ওই অর্থ সরকারের কোষাগারে জমা থাকে এবং সরকার তা প্রয়োজন অনুযায়ী বাজেটে নির্ধারিত বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজে লাগায়। এ কারণে অর্থনীতির পরিভাষায় সঞ্চয়পত্রের নিট বিনিয়োগকে সরকারের ‘ঋণ’ বা ‘ধার’ হিসেবে গণ্য করা হয়।
বর্তমানে সঞ্চয়পত্রের সুদহার
সঞ্চয়পত্রগুলোর মধ্যে পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষে ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়। পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশন সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। তিন বছর মেয়াদি মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। তিন বছর মেয়াদি ডাকঘর সঞ্চয়পত্রের সুদের হার বর্তমানে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ।
আরও পড়ুন : ৭৮ হাজার কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি
এদিকে গেল ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ১২ মাসে মোট ৭৮ হাজার ৭৮৪ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি করেছে সরকার। এরমধ্যে মূল ও মুনাফা বাবদ পরিশোধে ব্যয় হয়েছে ৩২ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা। মুনাফা পরিশোধ হয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা। এ হিসাবে অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রির পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৬ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা।
এসআই/এএইচ/পিআর