ফুটবলারদের ব্যাক্তিগত সেরার স্বীকৃতি দিয়ে থাকে বেশ কয়েকটি সংগঠন। ফিফা, উয়েফা থেকে শুরু করে প্রতিটি দেশও সেরা ফুটবলার বাছাই করে নেয়। তবে সব কিছু ছাপিয়ে ব্যাক্তিগত স্বীকৃতির সেরা পুরস্কারটির মর্যাদা ধরে রেখেছে সম্ভবত ফ্রান্স ফুটবল ম্যাগাজিন কর্তৃক দেয়া ব্যালন ডি’অর। একজন ফুটবলারের জন্য যা সর্বোচ্চ সম্মানের।
Advertisement
যদিও ব্যালন ডি’অর কিংবা ফিফা দ্য বেস্ট নিয়ে বিতর্ক রয়েছে বেশ কয়েক বছর ধরে। এমনকি, একবার সেরা ফুটবলারকে যে পুরস্কারটা দেয়া হয়নি, সেটা নিজেরাই স্বীকার করে নিয়েছিল ব্যালন ডি’অর কর্তৃপক্ষ। ২০১২ সালে ইউরোজয়ী স্পেনের ফুটবলার আন্দ্রে ইনিয়েস্তাকে ব্যালন ডি’অর না দিয়ে দেয়া হয়েছিল লিওনেল মেসিকে। যে কারণে গত বছর ব্যালন ডি’অর কর্তৃপক্ষ রীতিমত ক্ষমা প্রার্থনা করেছে ইনিয়েস্তার কাছে।
এবারও উয়েফার বর্ষসেরা কিংবা ফিফা বর্ষসেরা ‘দ্য বেস্ট’ নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট বিতর্ক। দুটো পুরস্কারই উঠেছে রিয়াল মাদ্রিদের ক্রোয়েশিয়ান ফুটবলার লুকা মদ্রিচের হাতে। কিন্তু কোন সাফল্যের জন্য তিনি দুটো সেরার পুরস্কার জিতে গেছেন, সেটা স্পষ্ট নয় কারো কাছে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের কথা বিবেচনা করলে সেটা ওঠার কথা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর হাতে। বিশ্বকাপের কথা বিবেচনায় আনলে ওঠার কথা ফ্রান্সের কোনো ফুটবলা, আন্তোনিও গ্রিজম্যান কিংবা কাইলিয়ান এমবাপের হাতে। অন্তত উয়েফা বর্ষসেরার পুরস্কারের ক্ষেত্রে রোনালদোর প্রতিদ্বন্দ্বীই কেউ থাকার কথাই না। কিন্তু রোনালদো রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে দেয়ার কারণে, তাকে পুরস্কারটা দেয়া হলো না? এমন প্রশ্ন এখন ফুটবল প্রেমীদের কাছে।
Advertisement
এবার সবচেয়ে প্রেস্টিজিয়াস পুরস্কার ব্যালন ডি’অর পাচ্ছেন কে সে দিকে নজর সবার। ইতোমধ্যেই ৩০ জনের তালিকা প্রকাশ করেছে ফ্রেঞ্চ সকার ম্যাগাজিন কর্তৃপক্ষ। এদের ভেতর থেকেই নানা প্রক্রিয়ায় বাছাই করে নেয়া হবে সেরা হচ্ছেন কোন ফুটবলার। সে সব প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে, ভক্ত-সমর্থকদের অনলাইনে সরাসরি ভোট।
অবাক করা ব্যাপার হলো, ব্যালন ডি’অর কর্তৃপক্ষ যে লিংকের মাধ্যমে সমর্থকদের কাছ থেকে ভোট নিচ্ছিল, সেখানে মেসির সমর্থকরাই সবচেয়ে বেশি অংশগ্রহণ করেছে। এক পর্যায়ে দেখা গেছে, সেখানে ৪৮ ভাগ ভোট পড়েছে মেসির নামে। যেটা সবচেয়ে বেশি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন মোহামেদ সালাহ। তিনি পেয়েছেন ৩১ ভাগ। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। তার অর্জন মাত্র ৮ ভাগ ভোট।
যখনই দেখা গেলো সমর্থকরা হুমড়ি খেয়ে পড়েছে মেসির নামের ওপর, তখনই ব্যালন ডি’অর কর্তৃপক্ষ ভোটের সেই লিংকটা সরিয়ে ফেলেছে অনলাইন থেকে। সবারই জানা কথা, ব্যালন ডি’অরের জন্য সেরা নির্বাচনে সমর্থকদের ভোট খুব একটা কাজে আসে না। তবুও ব্যালন ডি’অর কর্তৃপক্ষ সাধারণের মতামত জানতে এই ভোটাভুটির আয়োজন করেছে এবার। কিন্তু যখন দেখা গেলো, ভোটের ফলাফলে ফেবারিটের তালিকায় থাকা কেউ উপরে উঠতে পারছেন না, উপরে উঠে গেলেন মেসি, তখনই লিংকটা সরিয়ে নিলো আয়োজকরা।
ব্যালন ডি’অর কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে যারপরনাই অবাক হয়েছে ফুটবলপ্রেমীরা। যখন সমর্থকদের ভোটাভুটি কোনো কাজেই আসবে না তখন কেই বা সেটার আয়োজন করা হলো। আবার কেনই বা সেই লিংক সরিয়ে নেয়া হলো, তা কারোরই বোধগম্য নয়।
Advertisement
আইএইচএস/পিআর