জাতীয়

সাইরেন বাজতেই দৌড়ে এসে শোনেন ‘ইঞ্জিন টেস্ট’

সময় বেলা ১টা। হঠাৎ সাইরেন বেজে ওঠে পাটুরিয়া-ডামুড্যা রুটের প্রিন্স আওলাদ নামের একটি লঞ্চে। লঞ্চ ছাড়া শুরু হয়েছে বলে টার্মিনাল থেকে যাত্রীরা লঞ্চের সামনে ছুটে আসেন। কেউ কেউ তড়িঘড়ি করে ওঠেন লঞ্চে। এ সময় লঞ্চের একজন ছুটে এসে বলেন, ‘লঞ্চ এখন ছাড়বে না। ইঞ্জিন টেস্ট করার জন্য ওই পাড়ে যাচ্ছে।’

Advertisement

তার এ কথা শুনে যাত্রীদের মুখগুলো যেন হঠাৎ শুকনো হয়ে যায়। হতাশার সুরে কেউ একজন প্রশ্ন করে বসেন, কখন ছাড়বে? দুপুরের পর হয়তো ছাড়তে পারে- জবাব দেন লঞ্চের এক কর্মচারী।

আজ (বৃহস্পতিবার) সদরঘাট টার্মিনালে এমনই দৃশ্য চোখে পড়েছে। সেখানে দেখা যায়, কোনো লঞ্চে ঘণ্টা বাজলে কিংবা সাইরেনের শব্দ শুনলেই টার্মিনালে অপেক্ষমাণ পটুয়াখালী, বরিশাল, মুলাদী, শরীয়তপুর ও চাঁদপুরসহ বিভিন্ন জেলার যাত্রীরা ছুটে যাচ্ছেন। কিন্তু কোনো সুখবর মিলছে না। মাঝে মাঝে কিছু লোকজন এসে বিভিন্ন রুটের লঞ্চ ছাড়বে বলে যাত্রী ডাকলেও বাস্তবে কোনো লঞ্চ ছাড়ছে না। লঞ্চ না ছাড়ায় সদরঘাট থেকে নদীর ওপাড়ে পারাপারকারী নৌকার মাঝিরাও যাত্রী পাচ্ছেন না।

লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় স্বল্প আয়ের মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে। পটুয়াখালী থেকে চারদিন আগে ঢাকায় আসেন আছিয়া খাতুন নামের এক যাত্রী। স্বামীর সঙ্গে গাজীপুরে দেবরের বাসায় ওঠেন। বাড়ি ফিরতে দেবরের বাসা থেকে বিদায় নেন তিনি। ঘাটে এসে শোনেন লঞ্চ চলাচল বন্ধ।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘এখন দেবরের বাসায় ফিরে যেতে দেড়শ টাকা ভাড়া লাগবে। তাই কষ্ট করে টার্মিনালেই লঞ্চ ছাড়ার জন্য অপেক্ষা করছি।’

১ নম্বর টার্মিনালের অনুসন্ধান কক্ষের কর্মকর্তা মোশতাক আহমেদ জানান, এ লাইনে প্রতিদিন ৭০-৮০টি লঞ্চে ৪০-৫০ হাজার যাত্রী আসা-যাওয়া করে। গতকাল (বুধবার) থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ। বহু যাত্রী এসে ফিরে গেছেন। আবার কেউ কেউ টার্মিনালেই রয়ে গেছেন।

এদিকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় টার্মিনালের হোটেল, কনফেকশনারি ও ফল বিক্রেতাসহ সবার মাথায় হাত। আজিজ নামের এক ফল বিক্রেতা বলেন, ‘গতকাইল থাইক্যা এক টাকাও বেচতে পারি নাই। আল্লাহ আল্লাহ করতাছি, কখন স্টিমার ছাড়ব।’

এমইউ/এসআর/পিআর

Advertisement