ভারতে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় তিতলি। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ওড়িষ্যার কাছাকাছি গোপালপুরে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে বলে বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করেছে আবহাওয়া দফতর। প্রায় তিন থেকে চার ঘণ্টা ভূমিধস হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে গাছপালা এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে গেছে এবং কুচা এলাকায় বহু বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গোপালপুর এবং বার্হামপুরসহ বেশ কিছু এলাকায় যোগাযোগ ব্যহত হচ্ছে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ওড়িষ্যা ও অন্ধ্র প্রদেশের উপকূলে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় তিতলি। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের উপরে ঘোরাফেরা করা গভীর নিম্নচাপটি শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে।
দুযোর্গের কারণে জরুরি বৈঠকে বসেছেন ওড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। গঞ্জাম, পুরী, খুরদা, কেন্দ্রাপড়া ও জগৎসিংহপুর থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতি ও শুক্রবার ওড়িষ্যার চার জেলার স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ওড়িষ্যার গোপালপুরে আঘাত হানার সময় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০২ কিলোমিটার। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলামে ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় তিতলি।
Advertisement
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ওড়িষ্যার গোপালপুর এবং অন্ধ্রপ্রদেশের কলিঙ্গপত্তনমে ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়ার কথা তিতলির। আগামী ১৮ ঘণ্টায় আরও শক্তি বাড়বে ওই ঘূর্ণিঝড়ের।
তিতলির প্রভাবে শুক্রবার গঞ্জাম, গজপতি, পুরী, জগৎসিংহপুর, কেন্দ্রাপড়া, খুরদা, নয়াগড়, কটক, জাজপুর, ভদ্রক ও বালেশ্বরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। বৃহস্পতিবারও ওড়িষ্যার উপকূলবর্তী কিছু এলাকায় হালকা বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বুধবার রাত থেকে দক্ষিণ ওড়িষ্যার উপকূল ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইছে। তা ঘণ্টায় ১৬৫ কিলোমিটারও হতে পারে। দক্ষিণ উপকূলে ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। সমুদ্র অশান্ত থাকায় শুক্রবার পর্যন্ত ওড়িষ্যা উপকূল এবং মধ্য ও উত্তর বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন এলাকার জেলেদের সতর্ক করা হয়েছে।
ভারী বৃষ্টিতে বন্যার আশঙ্কায় ওড়িষ্যার প্রতিটি জেলায় সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন। মুখ্য সচিব এ পি পাধি জানিয়েছেন, দুর্যোগে একজনেরও যেন প্রাণহানি না হয়, তার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্য। বিশেষ ত্রাণ কমিশনার বিপি শেট্টি জানিয়েছেন, বিপজ্জনক ও নিচু এলাকাগুলো থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়া ব্যবস্থা করা হয়েছে।
Advertisement
উদ্ধারকাজে সহায়তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৩শটি মোটর বোট। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৬টি দল, ওড়িষ্যার র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের ১১টি দল ও দমকল বাহিনী তৈরি রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে রেল সেবা ব্যহত হচ্ছে।
টিটিএন/আরআইপি