দেশজুড়ে

রংপুর মেডিকেলে চান্স পেয়েছে রায়হান, পাশে দাঁড়াবেন কেউ?

রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার কৃষক সাদেকুল ইসলামের ছেলে আবু রায়হান। ভর্তি পরীক্ষার মেধা তালিকায় তার অবস্থান ১৪৪১তম। ১৫ অক্টোবরের মধ্যে ভর্তি হতে হবে তাকে। কিন্তু এখনও ভর্তি ও আনুষাঙ্গিক খরচের টাকা জোগার করতে পারেনি রায়হান। এ নিয়ে চিন্তায় পড়েছে তার পরিবার।

Advertisement

২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় রায়হান উপজেলার পারুলিয়া তফশলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন এ প্লাস এবং ২০১৮ সালে হাতীবান্ধা আলিমুদ্দিন কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে। ছোটবেলা থেকেই রায়হান মেধাবী হওয়ায় এসএসসি পাসের পর ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখে সে। এজন্য বাড়িয়ে দেয় পড়াশোনা। এইচএসসি পাসের পর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিলে রংপুর মেডিকেল কলেজে চান্স পায় সে। চান্স পেয়েও যেন আনন্দ ধরা দেয়নি তাকে তার পরিবারকে। তাদের সব আনন্দ আটকে যায় অর্থের চিন্তা করতেই।

রায়হান উপজেলার পাটিকাপাড়া ইউনিয়নের উত্তর পারুলিয়া গ্রামের কৃষক সাদেকুল ইসলাম ও রওশনা বেগমের ছেলে। তিন বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সে দ্বিতীয়। দীর্ঘদিন থেকে তাদের অভাব অনটনের সংসার। তারপরও কৃষক সাদেকুল সন্তানদের পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন। বড় মেয়ে সাবিনা খাতুন রংপুর সরকারি কলেজে ইংলিশে অনার্স, মেঝ মেয়ে শাবানা আক্তার হাতীবান্ধা আলিমুদ্দিন কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ও সবার ছোট মেয়ে রায়হানা স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়াশুনা করছে।

রায়হানের বাবা সাদেকুল ইসলাম বলেন, কৃষিই একমাত্র ভরসা আমার। সামান্য যে জমি আছে তা দিয়ে সারা বছরের চাল হয়ে যায়। ধান বিক্রি করে সন্তানদের পড়ালেখা চালিয়েছি এতদিন। আর পারছি না। যা জমি ছিল সব বিক্রি করে দিয়েছি আমার স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে। ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিল সে। তাকে সুস্থ করে তুলতেই আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। তাই ছেলে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েও আনন্দ আসছে না নিজের মাঝে। কারণে তাকে সামনে এগিয়ে দেয়ার মতো সাহস ও অর্থ কোনোটাই নেই আমার। জানি না শেষ পর্যন্ত কি হবে তার?

Advertisement

তিনি বলেন, সন্তানদের পড়ালেখা করাতে অনেকের কাছে সুদের উপর টাকা নিয়েছি। সময় মতো সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় দিন টাকার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে।

রায়হানের বিষয়ে হাতীবান্ধা আলিমুদ্দিন কলেজের অধ্যক্ষ সরওয়ার হায়াত খান জাগো নিউজকে বলেন, ছেলেটি মেধাবী। কেউ তার পাশে দাঁড়াতে সে তার কাঙ্খিত লক্ষে পৌঁছতে পারবে।

রবিউল হাসান/এমএএস/জেআইএম

Advertisement