শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় তিতলি মোকাবেলায় সব-রকমের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে উপকূলবর্তী মানুষের নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিতে খুলে দেয়া হয়েছে ৪৭৫টি আশ্রয়কেন্দ্র। প্রস্তুত রাখা হয়েছে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবকদের। পাশাপাশি জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ২৪ ঘণ্টা মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে।
Advertisement
বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ‘চট্টগ্রাম জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি’র সভায় জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন সাংবাদিকদের একথা জানান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দুর্যোগ প্রতিরোধে সক্ষমতা আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে। ফলে ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব রকমের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ৪৭৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেয়া হয়েছে, যাতে উপকূলবর্তী মানুষেরা আশ্রয় নিতে পারে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ২৪ ঘণ্টা মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে।’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার আপদকালীন সময়ের জন্য অর্থসঙ্কট আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দুর্যোগে আপদকালীন সময়ে শুকনো খাবার ও নগদ অর্থ দেয়া খুব জরুরি। কিন্তু বর্তমানে আমাদের দুর্যোগের সময় আপদকালীন ফান্ডে অর্থের ক্রাইসিস রয়েছে। সকালে বিষয়টি জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী এবং সচিব স্যারকে অর্থের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে অনুরোধ করেছি। আশা করি, দ্রুত পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ পাব।’
Advertisement
সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা, চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান ভূঁইয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান প্রমুখ। এছাড়া সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড, বন্দর, স্কাউটসের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদফতরের ১২ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত শত্তিশালী ঘূর্ণিঝড়টি সামান্য উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় হ্যারিকেনের তীব্রতা সম্পন্ন শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় তিতলিতে রূপ নিয়েছে। এ কারণে আবহাওয়া অধিদফতরের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কতে দেখাতে বলা হয়েছে।
এটি সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৮০ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৫০ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭২০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে আগামীকাল সকালে গোপালপুরের কাছ দিয়ে ভারতের উড়িষ্যা ও অন্ধ্র উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কি.মি. যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৪০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল রয়েছে।
Advertisement
আবু আজাদ/জেএইচ/জেআইএম