দুনিয়ার সব যুক্তির উর্ধ্বে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণই ইবাদত। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দেখানো পথে চলাই মুসলিম উম্মাহর একমাত্র কাজ। যার বাস্তব প্রমাণ পাওয়া যায় হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর জীবনে। সুন্নাতের অনুসরণে হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু সে বক্তব্য তুলে ধরা হলো-
Advertisement
হজরত ইবনু ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, (আমিরুল মুমিনিন হজরত) ওমর ফারুক (রাদিয়াল্লাহু আনহু) কাবা শরিফ তাওয়াফের সময় হাজারে আসওয়াদকে সম্বোধন করে বলেন-
'আমি নিশ্চিতরূপেই জানি যে, তুমি একটি পাথর মাত্র, কোনোরকম কল্যাণ-অকল্যাণের, উপকার বা ক্ষতির কোনো ক্ষমতা তোমার নেই।
যদি প্রিয়নবি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাকে চুম্বন না করতেন তাহলে কখনই আমি তোমাকে চুম্বন করতাম না। এরপর তিনি (প্রিয়নবির সুন্নাতের অনুসরণে) হাজারে আসওয়াদকে চুম্বন করেন।
Advertisement
অতঃপর তিনি (হজরত ওমর) বলেন, তাওয়াফের সময় (মুজাহিদের মতো বীরদর্পে দুই কাঁধ দুলিয়ে দ্রুতপায়ে চলার) দৌড়ানোর আর কী প্রয়োজন? আমরা তো মুশরিকদের ভয় দেখানোর জন্য এভাবে তাওয়াফ করেছিলাম। আল্লাহ তাআলা তো মুশরিকদেরকে ধ্বংস করেছেন।
অতঃপর তিনি বলেন, একটি কাজ, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম করেছেন (কোনো যুক্তি বা প্রয়োজন না থাকলেও) আমরা তা পরিত্যাগ করতে চাই না। ( বরং আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পদ্ধতিতে দৌড়ে দৌড়ে তাওয়াফ কবর)।'
আরও পড়ুন > দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা কি শুধু ইসলামেই নিষেধ?
সুন্নাতের অনুসরণ ও অনুকরণে হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু ছেলে ইবনু ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুও ছিলেন একনিষ্ঠ। তিনিও প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাতের অনুসরণ ও অনুকরণের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতেন।
Advertisement
হজরত যাইদ ইবনু আসলাম বলেন, আমি ইবনু ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে দেখলাম যাফরান মিশ্রিত সুগন্ধ ‘খালুক’ খেজাব দ্বারা তাঁর দাঁড়ি হলুদ রঙে খেজাব করেছেন। তাঁকে প্রশ্ন করলে তিনি (ইবনু ওমর) বললেন-
'আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এভাবে খেজাব দিয়ে (দাঁড়ি) হলুদ করতে দেখেছি। তাঁর কাছে এর চেয়ে প্রিয় রঙ আর কিছুই ছিল না। তিনি এই রঙ দিয়ে তার সব পোশাক এমনকি পাগড়ি পর্যন্ত রঙ করে নিতেন।'
সাহাবায়ে কেরাম এভাবেই প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাতের অনুসরণ ও অনুকরণ করেছেন। সুতরাং কোনো যুক্তি তর্কের মাধ্যমে নয়, কেন করেছেন সে প্রশ্নও নয়, কী প্রয়োজনে তা করেছেন এ রকম কোনো প্রশ্ন নয়।
যেহেতু তিনি করেছেন তাই তাঁরই মতো করে সব ইবাদত-বন্দেগি এবং দৈনন্দিন জীবনে প্রতিটি বিষয় বাস্তবায়ন করত হবে। আর যা তিনি বর্জন করেছেন তা বিনা বাক্যে ও কারণ জানা ছাড়াই বর্জ তা ন করতে হবে। এটাইআর ঈমাটিইনের একান্ত দাবি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুন্নাতের আলোকে জীবন রাঙানোর তাওফিক দান করুন। দুনিয়া ও পরকালের সফলতা লাভে আদেশ-নিষেধ বাস্তবায়নে বিনা প্রশ্নে সুন্নাতি জীবন-যাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম