শিক্ষানগরী হিসেবে পরিচিত রাজশাহী মহানগীর বিভিন্ন এলাকা স্থানীয় ও বহিরাগত আবাসন প্রকল্পের থাবায় পড়ে দিন দিন কমতে শুরু করেছে আবাদি জমির পরিমাণ। কারণ বিগত কয়েক বছরে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এলাকায় জমির দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। আর অধিক মুনফা অর্জনের লোভে জমির মালিকরা বিঘা বিঘা আবাদি জমির উপরে গড়ে তুলছে আবাসিক এলাকা। পরে ওই আবাসিক এলাকার জমিগুলো উচ্চ মূল্যে প্লট আকারে বিক্রি করা হচ্ছে ক্রেতাদের কাছে। আর বিভিন্ন আবাসন প্রকল্পের কোম্পানিগুলো এ সুযোগে জমির মালিককে ভালো মূল্যে পরিশোধ করে প্লটগুলো কিনে নিচ্ছে। পরে ওই প্লটগুলোর উপরে নির্মাণ করা হচ্ছে বহুতল ভবন। আর দেশের বিভিন্ন জেলার চেয়ে রাজশাহীর রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ হওয়ায় এ সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছেন বাহির থেকে চাকরি করতে আসা সরকারি চাকরিজীবি ও ব্যবসায়ীরা। এসময় তারা মুনাফালোভী জমির মালিকদের কাছে ভালো ও আকর্ষনীয় দাম পরিশোধের মাধ্যমে কিনে নিচ্ছেন প্লট কিংবা ফ্লাট। ফলে নগরবাসীর সুবিধা ও ঘনবসতির কথা চিন্তা করে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় উন্নয়ন ও শহর সম্প্রসারণের কাজ পরিচালনা করছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন। আর এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে নগরীতে আবাদি জমির পরিমাণ কোথায় গিয়ে পৌঁছাবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্টরা। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের দেয়া তথ্য মতে, প্রায় ৯৬.৭২ বর্গ কিলোমিটার জায়গা নিয়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এলাকা গঠিত। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এলাকা ৩১টি ওয়ার্ডে বিভক্ত। তবে ৯৬.৭২ বর্গ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে প্রায় চারভাগের দুই ভাগ ছিল আবাদি জমি। আর দুই ভাগ জায়গা নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছিলো ঘর-বাড়ি, অফিস-আদালত ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে কালের বিবর্তনে ও নগরীর জনসংখ্য বৃদ্ধি সাথে সাথে বেড়েছে আবাসিক এলাকার সংখ্যা। ফলে আবাদি জমিগুলো পরিণত হচ্ছে আবাসিক এলাকায়। এতে দিন দিন আবাদি জমির পরিমাণ আশংঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। এদিকে, রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, বিগত ৫ বছরে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এলাকা ছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলাগুলোতে কমেছে আবাদি জমির পরিমাণ। ওই সমস্ত এলাকাগুলোতে জনবসতি বৃদ্ধির সাথে সাথে আবাদি জমির উপরে গড়ে তোলা হয়েছে ঘর-বাড়ি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভবন। তবে কি পরিমাণ আবাদি জমি কমেছে তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কাছে।এ ব্যাপারে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরিচালক হযরত আলী জাগো নিউজকে জানান, কয়েক বছরের ব্যবধানে রাজশাহী মহানগর ও বিভিন্ন উপজেলায় উদ্বেগজনক হারে কমতে শুরু করেছে আবাদি জমির পরিমাণ। এর প্রধান কারণ হিসেবে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে শহর ও গ্রাম সম্প্রসারণকে তিনি প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে এমনটি চলতে থাকলে ভবিষ্যতে আবাদি জমির অভাবে কৃষিকাজ ব্যাহত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে জানান তিনি। আর রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র নিযাম-উল-আযিম জাগো নিউজকে জানান, বর্তমানে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের রাস্তাঘাট সম্প্রসারণের কাজ চলছে। আর বর্তমানে নগরীতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বিভিন্ন আবাসিক এলাকা সৃষ্টির জন্য আবাদি জমি কমে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে তিনি জানান। # সংকুচিত হচ্ছে খুলনা# যশোরে ৫ বছরে আবাদি জমি কমেছে পাঁচ হাজার হেক্টরএমএএস/পিআর
Advertisement