বিশেষ প্রতিবেদন

সর্বোচ্চ শাস্তি হলেই শান্তি পাবে নিহতদের আত্মা

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের আহত নেতারা। তারা বলেন, ওই হামলার সঙ্গে জড়িতদের এমন শাস্তি দিতে হবে, যাতে একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন আর না ঘটে। এছাড়া ওই হামলায় জড়িতরা শাস্তি না পেলে তারা আবারও একই ধরনের ঘটনা ঘটাবে। প্রকৃত দোষীরা শাস্তি পেলে নিহতদের আত্মা শান্তি পাবে বলেও মত দেন নৃশংস ওই হামলায় আহত আওয়ামী লীগের নেতারা।

Advertisement

কেমন রায় প্রত্যাশা করেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা ন্যায় বিচার চাই। আমি নিজেও ওই হামলায় আহত হয়েছি। আমাদের নেত্রী (শেখ হাসিনা) একটা কানের শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন। আইভি রহমানসহ ২৪ জনের প্রাণের প্রদীপ চিরদিনের মতো নিভে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সবাই জানে ওই হামলার মাস্টারমাইন্ড হচ্ছে হাওয়া ভবন, আর তারেক রহমান। এখন সত্যকে আড়াল করে লাভ নেই। তারপরও আমরা এই ব্যাপারে রায়ের আগে কোনো বক্তব্য দিতে চাই না। আদালতের কাছে আমরা শুধু ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি।’

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ওই গ্রেনেড হামলার সঙ্গে যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের প্রত্যেকের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করছি। কারণ ওই হামলা করা হয়েছিল আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের প্রথম সারির নেতাদের হত্যার জন্য। আইভি রহমান ও সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ভাইসহ ২৪ জন মানুষকে হত্যার শাস্তি কোনোক্রমেই নগণ্য হতে পারে না।’

Advertisement

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ. ফ. ম বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, ‘তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ যারা এ মামলার সঙ্গে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রত্যাশা করছি। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের শাস্তি হওয়ার পর আর যেন কেউ এমন জঘন্য হত্যাকাণ্ড ঘটাতে সাহস না পায়। শুধু তাই নয়, যারা ওই হত্যাকাণ্ডের মদদ দিয়েছেন, যারা মানুষ হত্যাকারী, মানুষের অর্থ আত্মসাৎকারী সেই বিএনপি-জামায়াত যেন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে, সে ব্যাপারেও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভাইস চেয়ারম্যান ও মতিঝিল মডেল হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি আওলাদ হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর হলেও এই মামলার রায় হতে যাচ্ছে। ওই হামলার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি। সর্বোচ্চ শাস্তি হলে যারা মারা গেছেন তাদের আত্মা শান্তি পাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার শরীরে ১০০ স্প্লিন্টার রয়েছে। আমাদের বেঁচে থাকা আর মারা যাওয়া তো প্রায় সমান কথা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তায় বিদেশে চিকিৎসা করিয়েছি। তারপরও রোদে এবং এসিতে থাকতে পারি না।’

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। ওই হামলায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুরুতর আহত হন। মহিলাবিষয়ক সভানেত্রী আইভি রহমানসহ নিহত হন ২৪ জন। আহত হন শতাধিক নেতাকর্মী। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলার অধিকতর তদন্ত শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, হুজি নেতা মুফতি হান্নান, সাবেক মন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু ও লুৎফুরুজ্জামান বাবরসহ ৫২ জনকে আসামি করা হয়। দীর্ঘ বিচারকাজ শেষে আগামীকাল বুধবার ওই ঘটনায় দায়ের করা দুই মামলার রায় ঘোষণা হবে।

Advertisement

এফএইচএস/জেএইচ/এমএআর/এমএস