অর্থনীতি

সাড়ে ৩২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২০ প্রকল্প অনুমোদন

চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পাইপলাইনে আসবে জ্বালানি তেল। এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সভায় মোট ২০টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। এগুলো বাস্তবায়নে মোট খরচ ধরা হয়েছে ৩২ হাজার ৫২৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১৫ হাজার ৪৯৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ১১ হাজার ৬৫৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৫ হাজার ৩৭৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা।

Advertisement

মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে এসব প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন সভাপতিত্ব করেন। সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

সভায় ‘চট্টগ্রাম হতে ঢাকা পর্যন্ত পাইপলাইনে জ্বালানি তেল পরিবহন’ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। এটি বাস্তবায়িত হলে স্বল্প সময়ে ও ব্যয় সাশ্রয়ী উপায়ে জ্বালানি তেল পরিবহনের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে। এছাড়া প্রতিকূল পরিবেশেও চাঁদপুর ঢাকা ও দেশের উত্তরাঞ্চলে জ্বালানি তেল সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রকল্পটিতে খরচ হবে ২ হাজার ৮৬১ কোটি ৩১ লাখ টাকা। চলতি বছর থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বর্তমানে জলপথে প্রায় ৯০ শতাংশ জ্বালানি তেল পরিবহন করা হয় এবং এই বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল পরিবহনের জন্য তেল বিপণন কোম্পানিগুলোর পরিবহনে বছরে প্রায় ২০০টি কোস্টাল ট্যাংকার নিয়োজিত রয়েছে। ভবিষ্যতে তেলের চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে কোস্টাল ট্যাংকারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে, যা চট্টগ্রামস্থ প্রধান স্থাপনায় বিদ্যমান লোডিং আনলোডিং এবং চাঁদপুর, গোদনাইল ও ফতুল্লা ডিপোতে লোডিং আনলোডিং অবকাঠামো দ্বারা পরিচালন কার্যক্রম গ্রহণ করা দুরূহ হয়ে পড়বে।

Advertisement

অন্যদিকে দিন দিন নদীগুলোর নাব্যতা কমে যাচ্ছে তাই কোস্টাল ট্যাংকার চলাচলে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে জ্বালানি তেলের চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত তেল পরিবহন সম্ভবপর হবে না। পাইপলাইনের মাধ্যমে পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য পরিবহণ সহজতর, নির্বিঘ্ন, সময় সাশ্রয়ী, কম ঝুঁকিপূর্ণ এবং পরিবেশবান্ধব হবে। এতে বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশেও জ্বালানি তেল সরবরাহ সম্ভব হবে। সার্বিকভাবে দেশে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার প্রকল্প, জরুরি সহায়তা প্রকল্প বিআরবি অংশ (কক্সবাজার আশ্রয়গ্রহণকারী বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের জন্য বিদ্যুতায়ন) প্রকল্প, রুরাল কানেটিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট (আরসিআইপি) প্রকল্প, বাংলাদেশ ইমারজেন্সি এসিসটেন্স (এলইডি অংশ) প্রকল্প, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্প, কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠাইন উপজেলাধীন নির্মিতব্য মিঠাইন সেনা উপস্থাপনা এর ভূমি সমতল উঁচুকরণ, ওয়েভ প্রটেকশন ও তীর প্রতিরক্ষা কাজ প্রকল্প, চট্টগ্রাম জেলাধীন রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালী উপজেলা এবং রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই উপজেলায় কর্ণফুলি ও ইছামতি নদী এবং শিলক খালসহ অন্যান্যখালের উভয় তীরের ভাঙন হতে রক্ষা প্রকল্প, রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া ও রংপুর সদর উপজেলায় তিস্তা নদীর ডান তীর ভাঙন হতে রক্ষা প্রকল্প।

এছাড়া ক্রস বর্ডার রোড নেটওর্য়াক ইম্প্রুভমেন্ট (বাংলাদেশ) প্রকল্প, গোবিন্দগঞ্জ -ঘোড়াঘাট-বিরামপুর-ফুলবাড়ী-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নতিকরণ প্রকল্প, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক (এন-১) উন্নয়ন প্রকল্প, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা উন্নয়ন ও পুর্নবার্সন প্রকল্প, দেশের গুরুত্বপূর্ণ ২৫টি (সংশোধিত ৪৬টি) উপজেলা সদর স্থানে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপন প্রকল্প, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন প্রকল্প, শহীদ এম. এনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও ৫০০ শয্যার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সিরাজগঞ্জ স্থাপন প্রকল্প, ১২টি ক্যাডেট কলেজের অবকাঠামোগত সুবিধাদি সম্প্রসারণ প্রকল্প, পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন (কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুর জেলা) প্রকল্প খরচ, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৫নং গুদারাঘাটের নিকট শীতলক্ষ্যা নদীর উপর কদমরসুল ব্রীজ নির্মাণ প্রকল্প এবং চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল (বেজা) বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সড়ক কাম বেড়িবাধঁ প্রতিরক্ষা এবং নিষ্কাশন প্রকল্প।

এমএ/জেএইচ/আরআইপি

Advertisement