এমন কিছু লোক আছে যারা অপরাধ না করেও অপরাধী। সাধারণত বিয়ে বহির্ভূত নারীর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন হলো ব্যভিচার। আবার যারা কারো জিনিস তার সম্মতি ছাড়া নিয়ে গেলে, তারা হয়ে যায় চোর। এটা মারাত্মক শাস্তিযোগ্য অন্যায়। কিন্তু এমন কিছু লোক আছে যারা শুধু নিয়তের গরমিলের কারণে ব্যভিচারি ও চোর হিসেবে সাব্যস্ত হয়।
Advertisement
বিয়ে ও ঋণ গ্রহণ দু'টিই বৈধ। কিন্তু নিয়তের গড়মিলের কারণে অপরাধ না করেও তারা ব্যভিচারি ও চোর হিসেবে সাব্যস্ত হয়। হাদিসের সে দুটি অবস্থার কথা প্রিয়নবি বর্ণনা করেছেন।
মানুষের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যারা নিজ স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে হয়ে ওঠে ব্যভিচারি আবার স্বাভাবিক সম্পদ বিনিময়েও হয়ে যায় চোর।
হাদিসের বিখ্যাত গ্রন্থ ইবনে মাজাহ-তে মুসলিম উম্মাহকে সতর্ক করার উদ্দেশ্যে প্রিয়নবি এমন দুই লোকের সুস্পষ্ট পরিচয় তুলে ধরেছেন। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
Advertisement
- যে ব্যক্তি স্ত্রীকে মাহর আদায় করার শর্তে বিয়ে করেছে অথচ তা না দেয়ার নিয়ত করে। (এ নিয়ত অবস্থায় সে লোক স্ত্রীর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক করলে ব্যভিচারি হিসেবে সাব্যস্ত হবে)।- আর পরিশোধ না করার ইচ্ছায় যে ব্যক্তি ঋণ গ্রহণ করে, সে চোর।’ (ঋণ নেয়ার সময়েই তা পরিশোধ না করার সংকল্প করায় সে ব্যক্তি চোর হিসেবে সাব্যস্ত হবে।
আরও পড়ুন > ব্যভিচারের অনুমতি চাওয়ায় যুবককে যা বলেছিলেন প্রিয়নবি
মাহর সম্পর্কে কুরআন ও সুন্নাহর অনেক নির্দেশনা হলো স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের আগেই তা পরিশোধ করা এবং স্ত্রী যদি স্বামীর প্রদানকৃত মাহর থেকে কিছু ছেড়ে দেয় কিংবা স্বামীকে উপহার দেয়, তবে স্বামী যেন তা সন্তুষ্টচিত্তে গ্রহণ করে। মাহর আদায় ছাড়া স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ককারী স্বামী ব্যভিচারি হিসেবে সাব্যস্ত হবে।
ঋণ পরিশোধ সম্পর্কে হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘কোনো মুসলমান ঋণ রেখে মারা গেলে তাকে আজাবের সম্মুখীন হতে হবে। আর কেউ যদি ওই মৃতব্যক্তির ঋণ পরিশোধ করে দেয়, তবে আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন উক্ত ঋণ পরিশোধকারীকে মুক্তি দান করবেন।’ (দারকুতনি, তারগিব-তারহিব)
Advertisement
অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘যে ব্যক্তি ঋণ রেখে মারা যাবে সে দোজখে আগুন ও অংগার ভর্তি একটি বিশাল সিন্দুক গর্দানে নিয়ে যন্ত্রণায় পাগলের ন্যায় ছুটাছুটি ও চিৎকার করতে থাকবে।’ (তাবরানি, তারগিব-তাহরিব)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত বিয়ের সঙ্গে সঙ্গেই মাহর পরিশোধ করা। কারণ বিয়ে করা সত্ত্বেও মাহর পরিশোধ না করলে সে ব্যভিচারি হিসেবে সাব্যস্ত হবে। বিশেষ করে মাহর পরিশোধের নিয়ত না করা থেকে বিরত থাকাও জরুরি।
আবার মৃত্যুর আগেই ঋণ পরিশোধ করা জরুরি। সাবধানতাবশত কেউ ঋণ গ্রহণ করলে তা লিখে রাখা কিংবা ওয়ারিশদের তা জানানোও আবশ্যক। যাতে তার মৃত্যু হলেও যেন ওয়ারিশগণ তার সম্পদ থেকে তা পরিশোধ করতে পারে।
হাদিসের ঘোষণায় যারা ঋণ পরিশোধ না করার নিয়তে তা গ্রহণ করে, তারা চোর। দুনিয়াতেই চুরির শাস্তি কঠোর। আর পরকালের শাস্তিতো আরো বেশি মারাত্মক। সুতরাং এ মনোভাব পরিহার করা খুবই জরুরি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উ্মাহকে উল্লেখিত দুটি বিষয়ের প্রতি যথাযথ গুরুত্বারোপ করার তাওফিক দান করুন। পরকালের কঠিন শাস্তি ও বিপদ থেকে হেফাজত করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর