অর্থনীতি

বাড়ল ডলারের দাম

টানা তিন মাস স্থিতিশীল থাকার পর টাকার বিপরীতে বাড়তে শুরু করেছে মার্কিন ডলারের দাম। গেল সপ্তাহে এক ডলারে দাম বেড়েছে ৫ পয়সা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে প্রতি ডলার বিক্রি করছে ৮৩ টাকা ৮০ পয়সা দরে, যা এক বছর আগের তুলনায় ৩ টাকা বেশি। গত বছর একই সময়ে এক ডলারের দাম ছিল ৮০ টাকা ৮০ পয়সা।

Advertisement

আমদানি দায় শোধ করতে নতুন এ হার বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে সাধারণ মানুষ, যারা ভ্রমণ করতে বিদেশে যাওয়ার কথা ভাবছেন, তাদের এক ডলার কিনতে হচ্ছে ৮৬ টাকার কাছাকাছি দরে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ভারতে রুপির মান ধারাবাহিক অবমূল্যায়ন হচ্ছে। তাতে বাংলাদেশে ডলারের আয় কমতে পারে। এ জন্য রফতানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ দরে রাখতেই ডলারের বিপরীতে টাকার মান কিছুটা অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।

ইন্টারনেট মানি এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (১০ অক্টোবর ) এক মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ভারতীয় মুদ্রার মূল্য এসে দাঁড়িয়েছে ৭৪ দশমিক শূন্য ২ রুপি। চলতি বছরের শুরুতে (১ জানুয়ারি) যা ছিল ৬৩ দশমিক ৮৮ রুপি। এ হিসাবে ১০ মাসের ব্যবধানে রুপির মান কমেছে ১৫ শতাংশ। এখন এক ডলারে পাওয়া যাচ্ছে ৭৪ দশমিক শূন্য ২ রুপিতে, যা রুপির ইতিহাসে এটি সর্বনিম্ন দর।

Advertisement

এদিকে ডলারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রুপির বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রাও শক্তিশালী হচ্ছে। ৭ অক্টোবরের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি রুপিতে মান দাঁড়ায় ১ টাকা ১৪ পয়সা। তবে গত বৃহস্পতিবার (৪ অক্টোবর) প্রতি রুপিতে মান কমে ১ টাকা ১৩ পয়সায় নেমেছিল। অর্থাৎ ১১৩ টাকায় ১০০ রুপি পাওয়া গেছে। টাকার বিপরীতে রুপির এ দর এযাবৎকালের সর্বনিম্ন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৭ অক্টোবরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ব্যাংকগুলোতে নগদ ডলারের মূল্য সর্বোচ্চ ৮৬ টাকা ৫০ পয়সায় উঠেছে। আমদানি পর্যায়ের ডলারের দর উঠেছে ৮৩ দশমিক ৮০ টাকায়। আর ব্রিটিশ পাউন্ডের দাম সোমবার দাঁড়িয়েছে ১১২ টাকা ২৯ পয়সা। নগদ ডলারের মূল্য সবচেয়ে বেশি উঠেছে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংক ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডে। ব্যাংক দুটিতে সোমবার প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৮৬ টাকা ৫০ পয়সা। সাধারণ মানুষের কাছে নগদ টাকায় সবচেয়ে কম দামে ডলার বিক্রি করছে এনআরডি গ্লোবাল ব্যাংক। ব্যাংকটি নগদ ডলার বিক্রি করছে ৮৪ টাকা ৩০ পয়সায়।

এদিকে চলতি বছরের ২৮ জুন থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডলারের দাম একটি জায়গায় স্থিতিশীল রেখেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সময়ে বাজারের ডলারের সংকট সামাল দিতে ব্যাংকগুলোর কাছে ২০ কোটি ডলার বিক্রি করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ৩ অক্টোবর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ১৯৭ কোটি ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনের অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই শেষে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১১৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার, যা গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১০৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে ১২ কোটি ৭০ লাখ ডলার বা ১২ দশমিক ১৪ শতাংশ।

Advertisement

এসআই/জেডএ/পিআর