এটা কি শুধু ইনজুরি নাকি শনির দশা? কি বলবেন? যাই বলা হোক না কেন, আসল সত্য হলো বাংলাদেশ শিবিরে হঠাৎই ‘ইনজুরি’ চেপে বসেছে। দু একজনের বিচ্ছিন্ন ইনজুরি নয়, এক সাথে চার–পাঁচ জন আহত।
Advertisement
অবশ্য এর মধ্যে তামিম ও সাকিবের ইনজুরি যতটা বড় ও গাঢ়, বাকিদের ততটা নয়। ব্যাটিং ও বোলিংয়ের দুই প্রধান স্তম্ভ তামিম ও সাকিব ইনজুরির কারণে মাঠের বাইরে । বাঁহাতের কনিষ্ঠা আঙুলের ফ্র্যাকচার ও ইনফেকশন থেকে মুক্তির সংগ্রামরত সাকিব অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চিকিৎসাধীন।
এশিয়া কাপের আগে থেকে কব্জির ব্যাথায় ভোগা তামিম আসর শুরুর দিন শ্রীলঙ্কার সাথে কব্জিতে বল লেগে আহত। ফ্র্যাকচার হওয়া কব্জির চিকিৎসা করাতে লন্ডনও যেতে হয়েছে দেশ সেরা ওপেনারকে। এখন দেশে ফিরে রিহ্যাবে কাটছে দিন।
মোদ্দা কথা, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টেস্ট সিরিজে তামিম আর সাকিব খেলতে পারবেন না। তাদের ছাড়াই মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
Advertisement
শুধু ঐ দুই শীর্ষ তারকাই নন, যে পাঁচ পরিণত, অভিজ্ঞ ও ঝানু সেনার ওপর নির্ভরশীল বাংলাদেশ– সেই পঞ্চ পান্ডবের বাকি তিন সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা, মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও পুরোপুরি সুস্থ নন। ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও কম বেশী ইনজুরিতে ভুগছেন।
ওয়ানডে অধিনয়ক মাশরাফি সেই এশিয়া কাপে পাকিস্তানের সাথে খেলায় শোয়েব মালিকের ক্যাচ ধরতে গিয়ে হাতের আঙুলে ব্যথা পেয়েছেন। মুশফিকের পাজরে ব্যথাও পুরনো। আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদেরও পিঠে ব্যাথা।
এদের সাথে ছোট খাট সমস্যা ও ফিটনেস সমস্যা আছে আরও তিনজনের। কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান, আবার নিজেকে ফিরে পাওয়া দ্রুত গতির বোলার রুবেল হোসেন এবং অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজও পুরোপুরি সুস্থ নন।
তাই এশিয়া কাপ শেষে দেশে ফেরার পর প্রথম রাউন্ডের মত জাতীয় লিগের দ্বিতীয় পর্বেও বিশ্রামে রুবেল, মোস্তাফিজ ও মেহেদি হাসান মিরাজ । তার মানে দাঁড়ালো- অধিনায়ক মাশরাফি ছাড়া এশিয়া কাপের পর দেশে ফিরে জাতীয় লিগের কোনো ম্যাচ না খেলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডেতে মাঠে নামবেন মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, রুবেল, মোস্তাফিজ ও মিরাজ।
Advertisement
বলার অপেক্ষা রাখে না এই পাঁচের তিনজনই খুলনা বিভাগের ক্রিকেটার। কিন্তু কিছুই করার নেই। ফিজিওর পরামর্শেই রুবেল, মোস্তাফিজ ও মিরাজ বিশ্রামে। তাদের তিনজনকে ছাড়া কঠিন বোলিং সংকটে খুলনা।
আজ থেকে খুলনায় শুরু হওয়া জাতীয় লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডে বরিশালের বিপক্ষে খুলনার হয়ে পেসার আল আমিন হোসেনের সাথে বোলিং সূচনা করেছেন পার্টটাইমার সৌম্য সরকার।
মাশরাফি এমনিতেই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট বা দীর্ঘ পরিসরের ম্যাচ খেলেন কালে ভদ্রে। তামিম, সাকিব আবার মাঠে ফেরার প্রাণপণ লড়াই করছেন।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে–টেস্ট সিরিজ যাতে নির্বিঘ্নে খেলতে পারেন, তাই মুশফিক–মাহমুদউল্লাহ দুই ভায়রাকে টিম ম্যানেজমেন্ট বিশ্রাম দিয়েছেন। আর সাথে এশিয়া কাপে প্রচন্ড গরমে অনেক এনার্জি ক্ষয় হওয়া দুই পেসার মোস্তাফিজ-রুবেলও তাই চার দিনের জাতীয় লিগের এ পর্বেও বিশ্রামে। আর মেহেদি মিরাজের কথা থাকলেও তার হাতে ব্যথার কারনে তাকে শেষ মুহুর্তে একাদশের বাইরে রাখা হয়েছে।
এদিকে আগামী ১১ অক্টোবর শেষ হচ্ছে এবারের জাতীয় লিগের দ্বিতীয় পর্ব। এশিয়া কাপ থেকে দেশে ফিরে প্রথম পর্ব বিশ্রামে কাটানো লিটন দাস, ইমরুল কায়েস, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকৎ, আবু হায়দার রনি এ পর্বে অংশ নিচ্ছেন।
প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু আগেই জানিয়েছিলেন, অপর নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন আজ সকালে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করলেন, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে যারা ডাক পাবেন, তারা ওয়ানডে সিরিজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় লিগ খেলতে পারবেন না। ১৫ অক্টোবর শুরু জাতীয় লিগের তৃতীয় বা পরের রাউন্ড। ঠিক ঐ দিন থেকে শুরু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রস্তুতি।
এআরবি/এসএএস/জেআইএম