বিশেষ প্রতিবেদন

আওয়ামী লীগে তিন প্রস্তুতি

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে তিন প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলীয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রস্তুতিগুলো হলো- বিরোধী শক্তিগুলোর আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা প্রতিহত, দলীয় কোন্দল দূর ও নির্বাচন।

Advertisement

দলের নেতারা বলছেন, নির্বাচন সামনে রেখে আন্দোলনের নামে নানা ঘটনা ঘটতে পারে। নাশকতা, বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের। সে ক্ষেত্রে আন্দোলনের নামে যে কোনো পরিস্থিতি রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলার প্রস্তুতি রয়েছে।

আওয়ামী লীগ নেতাদের ভাষ্য অনুযায়ী, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দলীয় নেতাদের মাঝে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থেকে একধরনের কোন্দল-সংঘাত দেখা দিয়েছে। সেই কোন্দল নিরসন করে ঐক্যবদ্ধ দল গঠনের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দলীয় প্রস্তুতিও চলছে।

দলটির ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে রাজধানীতে গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করছে আওয়ামী লীগ। এ কর্মসূচির মাধ্যমে দলীয় নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রাখার পাশাপাশি মাঠ নিজেদের নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি দৃশ্যমান বলে মনে করেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

Advertisement

গত ৩০ আগস্ট বিমানে করে সিলেট সফরে যান আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল। সফরে সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মাঝে দ্বন্দ্ব দূর করার কথা বলেন কেন্দ্রের নেতারা। গত ৮ সেপ্টেম্বর ট্রেনযোগে উত্তরবঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে যান আওয়ামী লীগ নেতারা।

‘নীলসাগর এক্সপ্রেস’ করে ঢাকা থেকে নীলফামারী যাওয়া প্রতিনিধি দলটি টাঙ্গাইল, পাবনার ঈশ্বরদী, নাটোর, বগুড়ার সান্তাহার, আক্কেলপুর, জয়পুরহাট, দিনাজপুরের বিরামপুর, ফুলবাড়ি, পার্বতীপুর ও নীলফামারীর সৈয়দপুর স্টেশনে পথসভা করে। পথসভায় তৃণমূল নেতাদের মধ্যে বিরোধ দূর করে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

এছাড়া গত ২২ সেপ্টেম্বর সড়ক পথে কুমিল্লা, চৌদ্দগ্রাম, ফেনী ও চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার যাওয়ার পথে কর্ণফুলী, লোহাগড়া, চকরিয়া ও কক্সবাজার ঈদগাহে পথসভা করে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল। ওই সফরেও নৌকার পক্ষে ভোট চাওয়ার পাশাপাশি কোন্দল মেটানোর নির্দেশ দেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর একাধিক নেতা জানান, জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারাদেশে নির্বাচন কেন্দ্র-ভিত্তিক ৪০ হাজার কমিটি গঠনের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচন কেন্দ্র-ভিত্তিক কমিটি গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় এ কার্যক্রম চলছে।

Advertisement

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এ প্রসঙ্গে বলেন, সংশ্লিষ্ট এলাকায় আওয়ামী লীগের বিশ্বস্ত ছেলে-মেয়েদের নিয়ে এ কমিটি গঠনের কথা বলেছি। এরাই হবে ভোটের পাহারাদার। কেউ যদি জাল ভোট বা কারচুপি করতে চায় তাহলে কেন্দ্র-ভিত্তিক কমিটির সদস্যরা রুখে দাঁড়াবে। এ কমিটির সদস্যদের প্রশিক্ষণও দেয়া হবে।

বিগত তিন মাসে বিভিন্ন জেলায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সফর সম্পর্কে দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘নেতাকর্মীরা নির্বাচনকে ঘিরে উজ্জীবিত হচ্ছেন। নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিএনপি-জামায়াতের চেষ্টার বিরুদ্ধে আমাদের রাজনৈতিক বক্তব্যগুলো তুলে ধরছি। পাশাপাশি বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো তুলে ধরা হচ্ছে।’

‘আমরা একটা নির্বাচনী উৎসবের পরিবেশ তৈরি করছি’- যোগ করেন তিনি। এইউএ/এএইচ/পিআর