মধ্যরাত। তখন সময় রাত ১টা ২ মিনিট। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন গাড়ির মালিক। হঠাৎ এমন সময় একটি সাদা রঙের গাড়িতে করে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় ঢুকে পড়লেন পুরো শরীরে সাদা রঙের হুডি, হাতে গ্লাভস ও মুখোশ পরিহিত দুই ব্যক্তি। তাদের একজন তার লাগানো একটি রিলে অ্যামপ্লিফায়ার নিয়ে ঘরের দরজা-জানালার কাছে এগিয়ে আসলেন।
Advertisement
অপরজন কালো রঙের টয়োটা গাড়ির কাছে থাকলেন। অ্যামপ্লিফায়ার হাতে থাকা ব্যক্তি দরজা-জানালার কাছে যন্ত্রটি ধরতেই গাড়ি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে যায় এবং সামনের ও পিছনের লাইটের আলো জ্বলে ওঠে। এরপর গাড়িটি নিয়ে সটকে পড়েন ওই দুই বক্তি। আর এ পুরো কাজটি করতে সময় লেগেছে মাত্র ৬০ সেকেন্ড।
এমনইভাবে অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে গাড়ি চুরির ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার রাজ্যে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল এ তথ্য জানিয়েছে। বাড়ির সিসিটিভির ফুটেজে এ দৃশ্য ধরা পড়েছে।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ‘রিলে’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে চোরেরা চাবি ছাড়াই গাড়িটি নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে সহজেই চাবি ব্যবহার না করেই গাড়ি আনলক করা যায়। যন্ত্রটি গাড়ির আশপাশে কিংবা একটু দূরে ঘরের জানালায়, টেবিল বা হুকে থাকা চাবি থেকে নিংসৃত সিগনাল ট্রান্সমিটারে পাঠিয়ে দেয়। আর এতেই গাড়ি আনলক হয়ে যায়।
Advertisement
গাড়ির মালিক ল্যাং বলেন, ‘গাড়ির চাবিটি বাড়ির মধ্যে ৩০ ফুট দূরে রাখা ছিল। তবে যে ট্রান্সমিটার ব্যবহার করে চাবির সিগনাল নেয়া হয়েছে, তা অবশ্যই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন। আমি বিশ্বাস করতে পারছি না, এটা কীভাবে হলো?’
এ ঘটনার পর ল্যাং বিষয়টি পুলিশ ও বীমা কোম্পানিকে অবহিত করেছেন।
ডেইলি মেইল বলছে, ধারণা করা হচ্ছে, সম্প্রতি ম্যানচেস্টারে যতগুলো গাড়ি চুরির ঘটনা ঘটেছে, তার জন্য ৪৪ শতাংশ (দেশে ঘটে যাওয়া গাড়ি চুরির ঘটনার দ্বিগুণ) দায়ী এই রিলে প্রযুক্তি।
রিচার্ড বিলিয়াল্ড একজন যানবাহনের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, চাবিবিহীন গাড়িতে প্রবেশের ব্যবস্থা গাড়ির চালকের জন্য বেশ সুবিধাজনক হলেও অপরাধীরাও এই সুযোগ নিতে শুরু করেছে। এজন্য চালকদের উচিত এই পদ্ধতির বিষয়ে ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেয়া।
Advertisement
এসআর/পিআর