ময়মনসিংহের ত্রিশালের চেচুয়া বিলের ‘অলৌকিক’ পানি পান করে রোগ ভালো হওয়ার গুজব ছড়িয়েছে। রোগ ভালো হওয়ার আশায় নোংরা ও কাদাযুক্ত পানি পান করে অসুস্থ হয়ে পড়েছে শিশুসহ কয়েকশ নারী-পুরুষ। এতে করে ওই বিলের পানি সংগ্রহ করতে মানুষের ঢল নেমেছে।
Advertisement
উপজেলা প্রশাসন ও ত্রিশাল থানা পুলিশ জানায়, গত মঙ্গলবার সকালে এলাকাবাসী হঠাৎ লক্ষ্য করে, উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের চেচুয়া বিলের মাঝখানে কচুরিপানা সরে গিয়ে পানি বুদ বুদ করছে। এ দৃশ্য দেখে এলাকার কিছু অসাধু ব্যক্তি একে অলৌকিক পানি বলে প্রচার করতে শুরু করে।
এর মধ্যে কিছু ভণ্ড প্রকৃতির লোক বিলে গোসল করে তাদের রোগ-বালাই ভালো হয়েছে বলে ফেসবুকে গুজব ছড়ায়। এতে শিশুসহ নারী-পুরুষ ওই বিলের পানিতে গোসল করতে শুরু করে। সেখানে দিনদিন মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। রোগ ভালো হওয়ার জন্য পানি পান শুরু করে তারা। নোংরা ও কাদাযুক্ত পানি পান করে অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশুসহ কয়েকশ নারী-পুরুষ।
দিনাজপুর থেকে সাইদুর রহমান তার পঙ্গু ছেলে বিজয়কে ওই বিলে নিয়ে এসেছেন আরোগ্য লাভের আশায়।
Advertisement
তিনি জানান, তিনি তার ঢাকার এক আত্মীয়ের মাধ্যমে খবর পেয়ে এখানে এসেছেন। যৌশহরের মনোয়ারা বেগম জানান, তিনি ফেসবুকের মাধ্যমে খবর পেয়ে এখানে এসেছেন।
শনিবার ত্রিশালের রামপুর ইউনিয়নের কাকচর গ্রামের চকপাড়ায় সাইকেল, রিকশা, ভ্যান, সিএনজি, মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত অটোতে করে অথবা পায়ে হেঁটে দলে দলে লোক আসছেন চেঁচুয়া বিলের পানি নিতে। অন্যদিকে বিলের আসে পাশে গড়ে উঠেছে খালি বোতল বিক্রি করাসহ বিভিন্ন দোকান।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, ভাইস চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লুৎফুন নেছা বিউটি, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদ উদ্দিন ও ত্রিশাল থানার ওসি আজিজুর রহমান সরেজমিনে গিয়ে কুসংস্কারে আচ্ছন্ন হয়ে চেঁচুয়া বিলের পানি, মাটি, কচুরিপানা ব্যবহার না করার জন্য প্রথমে মাইকে আহ্বান জানান। এতে কাজ না হওয়ায় ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদ উদ্দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীদের লাঠিচার্জের আদেশ দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
ত্রিশাল থানা পুলিশের ওসি আজিজুর রহমান জানান, এটা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে ময়মনসিংহ হতে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য আনা হবে।
Advertisement
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদ উদ্দিন জানান, পরিস্থিতির অবনতি হলে ১৪৪ ধারা জারি হতে পারে। আমরা বিষয়টি দেখছি।
এএম/আরআইপি