পটুয়াখালীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ডিমওয়ালা ইলিশ। এরই মধ্যে ৭ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরা, পরিবহন, মজুত ও বিক্রি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য বিভাগ। জেলেদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে চলছে নানা ধরনের প্রচার-প্রচারণা। নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের সহায়তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করেছে সরকার।
Advertisement
ইলিশের প্রজনন সময়ে মা ইলিশ রক্ষা ও পরবর্তীতে জাটকা নিধন বন্ধ করায় বিগত বছরগুলোতে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামীতেও এই ধরাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে জানান মৎস্য কর্মকর্তারা।
জেলেরা জানান, এ বছর মৌসুমের শেষ সময়ে ইলিশ ধরা পড়া শুরু করেছে। এখন যে সব ইলিশ ধরা পড়ছে তার অধিকাংশের পেটে ডিম দেখা যাচ্ছে। এসব মাছ এখন সাগর মোহনা থেকে নদ-নদীতে ছুটে আসছে। ফলে জেলেদের মুখে হাসি ফুটেছিল। কিন্তু এখনই মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় তারা আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়বেন। টানা ২২ দিন মাছ ধরতে না পারায় কীভাবে সংসার চলবে তা নিয়ে চিন্তায় আছেন জেলেরা।
সরকারি হিসেবে, পটুয়াখালী জেলায় ৬৯ হাজার ৬৬০ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন। তবে এই জেলায় লক্ষাধিক মানুষ নদী ও সাগরে মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। বিগত বছরগুলোতে ইলিশের প্রজনন মৌসুম নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করার সুফল মিলেছে।
Advertisement
এদিকে নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেদের সহায়তায় জেলার ৪৫ হাজার ৬৪২ জন জেলের জন্য ২০ কেজি করে ৯১২.৮৪ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে জেলায় ইলিশের উৎপাদন ছিল ২৮ হাজার মেট্রিক টন, ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে ৩২ হাজার ৭৫০ মেট্রিক টন এবং ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩ হাজার ২৮৯ মেট্রিক টনে।
পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান জানান, নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশ নিধন বন্ধে জেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বাড়তি প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশ নিধন বন্ধে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সার্বক্ষণিক সাগর, নদী ও স্থানীয় হাট-বাজার মনিটরিং করবেন। ইলিশ ধরা, বিক্রি, পরিবহন ও মজুত বন্ধ করতে ২২ দিন জেলার সকল বরফকল বন্ধ রাখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
Advertisement
মহিব্বুল্লাহ্ চৌধুরী/আরএআর/জেআইএম