আধুনিক স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট কম্পিউটার পরখ করে দেখার ও কেনার সুযোগ করে দিতে অতীতের তুলনায় এবার বড় পরিসরে শুরু হয়েছে ‘রবি স্মার্টফোন ও ট্যাব এক্সপো ২০১৫’। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপি এই মেলা শুরু হয়।এদিন বিকেল ৩টায় মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মোস্তাফা জব্বার ও এভারেস্ট বিজয়ী প্রথম বাংলাদেশি মূসা ইব্রাহীম।এছাড়া বক্তব্য রাখেন রবির কমিউনিকেশনস ও কর্পোরেট রেসপনসিবিলিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ইকরাম কবির, এলিটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী আশফাকুল মনি, গোল্ডবার্গের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা রাসেল আহমেদ, হুয়াওয়ের হেড অব সেলস আবদুস সাদাৎ কবির প্রমুখ।প্রধান অতিথি জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ২০০৮ সাল থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশে ভিশন শুরু হয়। এখন এটি আর স্বপ্ন নয়, অনেকাংশেই বাস্তব। সরকার সবসময় প্রযুক্তিনির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চায়। সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছি আমরা।তিনি আরো বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত সাতবার ইন্টারনেটের দাম কমানো হয়েছে, যাতে দেশে ব্যবহারকারীরা সহজে ও কমমূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে। বর্তমানের দেশের চার কোটি ৮৪ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে। যার প্রায় ৯৭ শতাংশই মোবাইলের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।বিশেষ অতিথি মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশে ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন ও রফতানি করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আশাকরি প্রধানমন্ত্রীর এই লক্ষ্যমাত্রা দ্রুতই বাস্তবায়িত হবে। আমাদেরকে স্মার্টফোন বা ট্যাবের মতো প্রযুক্তি ডিভাইস শুধুমাত্র ফেইসবুক ব্যবহারের জন্য নয়, শিক্ষামূলত ও দৈনন্দিন কাজে লাগাতে হবে।মূসা ইব্রাহীম বলেন, দেশের মানুষকে সত্যিকারের তথ্যপ্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের সেবা দিতে হলে ঢাকার দামে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে হবে।রবির কমিউনিকেশনস ও কর্পোরেট রেসপনসিবিলিটি`র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইকরাম কবির বলেন, রবি দেশে ইন্টারনেটকে সহজলভ্য করতে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা বিশেষ মূল্যছাড় বা প্যাকেজের মাধ্যমে গ্রাহকদের ভালোমানের ডিভাইসও সরবরাহ করছি।স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট কম্পিউটার নিয়ে দেশে এটি এক্সপো মেকারের চতুর্থ প্রদর্শনী। মেলা উপলক্ষে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ ছাড় ও উপহার দিচ্ছে। দর্শকরা আধুনিক প্রযুক্তির সব স্মার্ট ডিভাইস যাচাই বাছাই করে দেখতে ও কিনতে পারছেন। পাশাপাশি প্রদর্শনীতে প্রথম দিন থেকেই উন্মুক্ত করা হচ্ছে একাধিক ব্র্যান্ডের বেশ কয়েকটি নতুন মডেলের স্মার্টফোন।এক্সপো মেকারের হেড অব অপারেশনস নাহিদ হাসনাইন সিদ্দিকী জানান, দর্শণার্থী ও বিক্রেতাদের সুবিধার্থে এবার মেলার পরিধি বাড়ানো হয়েছে। একটি মেগা প্যাভিলিয়ন, ১৩টি প্যাভিলিয়ন, পাঁচটি মিনি প্যাভিলিয়ন এবং ১০টি স্টলে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সর্বশেষ প্রযুক্তি ও মডেলের ডিভাইস প্রদর্শনী ও বিক্রি করছে।মেলায় স্যামসাং, অ্যাপল, সিম্ফনি, স্টাইলাস, গোল্ডবার্গ, জেডটিই, অপ্পো, হুয়াওয়ে, ম্যাক্সিমাস, সনি, র্যাংগস, এলিট, আসুস, লেনোভো, মাইসেল, টুইনমস, প্রেস্টিজিও, কন্টিগো, শাওমি, জিওনি, ওয়ান প্লাস, এইচটিএস, এডাটা, এইচপিএস, গ্যাজেট গ্যাং সেভেন, মিউজু, আইনল, ডিএক্স জেনারেশন প্রভূতি ব্র্যান্ড অংশগ্রহণ করেছে। এছাড়া গ্রাহকদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্মত মোবাইল ফোন সেট এনেছে রবি।১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। এ উপলক্ষে মেলায় রয়েছে বিশেষ প্যাভিলিয়ন। এ প্যাভিলিয়নে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুর্লভ ছবি ও ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘জন্মযুদ্ধ ৭১’ ও আয়োজক প্রতিষ্ঠান এক্সপো মেকার যৌথভাবে এই উদ্যোগ নিয়েছে।এবারের মেলার প্রধান পৃষ্ঠপোষক টেলিকম অপারেটর রবি। সহ-পৃষ্ঠপোষকতায় রয়েছে এলিট মোবাইল, গোল্ডবার্গ, হুয়াওয়ে, স্যামসাং, স্টাইলাস, সিম্ফনি ও জেডটিই। সহযোগী হিসেবে রয়েছে এডুমেকার, এলিট ফোর্স, পিপলস রেডিও ৯১.৬ এফএম ও টেকশহর ডটকম।মেলা উপলক্ষে রবি স্মার্টফোন ও ট্যাব এক্সপোর অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজে (https://www.facebook.com/STExpo) বিশেষ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এতে বিজয়ীদের ট্যাব, স্মার্টফোনসহ আকর্ষণীয় পুরস্কার দেওয়া হবে।প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই মেলা চলবে। মেলায় প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা। তবে স্কুলের শিক্ষার্থীরা ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় কিংবা পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে বিনামূল্যে প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছে। প্রতিবন্ধীরাও বিনামূল্যে প্রবেশের এই সুযোগ পাচ্ছেন।এএ/বিএ
Advertisement