অর্থনীতি

জনতা ব্যাংকের দুই পরিচালক প্রত্যাহার

অনিয়ম-দুর্নীতি ও ঋণ জালিয়াতি নিয়ে নানা আলোচনা-সমালাচনার মধ্যে জনতা ব্যাংকের দুই পরিচালককে প্রত্যাহার করা হয়েছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তাদের সরিয়ে দেয় সরকার।

Advertisement

তারা হলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. আবদুল হক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মানিক চন্দ্র দে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, সরকারজনতা ব্যাংকের দুই পরিচালককে প্রত্যাহার করেছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও অনাপত্তি দিয়েছে।

জানা গেছে, গত বুধবার (৩ অক্টোবর) দুই পরিচালক প্রত্যাহারের বিষয়ে জনতা ব্যাংকের পর্ষদের কাছে চিঠি দেয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। ওই দিনই জনতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার (৪ আক্টোবর) দুই পরিচালককে প্রত্যাহার বিষয়ে অনাপত্তি চেয়ে ব্যাংকের পক্ষ থেকে চিঠি দিলে তাতে সায় দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে জনতা ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে এ দু’জনের নাম সরিয়ে ফেলা হয়।

Advertisement

জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ১৩ পরিচালক পদ রয়েছে। দুই পরিচালক প্রত্যাহারের পর বর্তমানে ব্যাংকটিতে আটজন পরিচালক আছেন। শূন্য রয়েছে পাঁচটি পদ।

বাদ দেওয়া দুই পরিচালকের মধ্যে মো. আবদুল হক তিন বছর মেয়াদে জনতা ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন গত বছরের ১১ জুলাই। ২০২০ সালের ১০ জুলাই পর্যন্ত তার মেয়াদ ছিল। আরেক পরিচালক মানিক চন্দ্র দে ২০১৫ সালের ৩০ জুন তিন বছর মেয়াদে পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। আগামী ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত তার মেয়াদ ছিল।

এদিকে ঋণ জালিয়াতির কারণে আর্থিক খাতে এখন আলোচিত জনতা ব্যাংক। ভুয়া নথি দিয়ে বিভিন্ন পক্ষের যোগসাজশে ক্রিসেন্ট গ্রুপ ও এননটেক্স নামের দুই প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার ঋণ দিয়ে এখন বিপাকে আছে ব্যাংকটি। এসব ঋণ আদায় না হওয়ায় ব্যাংকটির মোট খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্যাংকটির নিট লোকসান হয়েছে এক হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। জুন শেষে ব্যাংকটি দুই হাজার ১৯৫ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতি পড়েছে।

সম্প্রতি ক্রিসেন্ট গ্রুপের পাঁচ প্রতিষ্ঠানের তিন হাজার ৪৪৬ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য নিলাম ডেকেছে জনতা ব্যাংক। এননটেক্সকে দেওয়া সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা ঋণের একটি অংশও খেলাপিতে পরিণত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

Advertisement

এসআই/এনডিএস/এমএস