জাতীয়

শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য পরমাণু অস্ত্র নিরোধ জরুরি

সর্বাত্মক পারমাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধকরণ চুক্তি সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সংস্থার (কমপ্রিহেনসিভ নিউক্লিয়ার টেস্ট ব্যান ট্রিটি অর্গানাইজেশন-সিটিবিটিও) নির্বাহী সচিব ল্যাসিনা জারবো বলেছেন, পৃথিবীতে এখন শান্তি প্রয়োজন। বৈশ্বিক শান্তি এবং সমৃদ্ধি নিশ্চিতে পরমাণু অস্ত্র নিরোধ চুক্তিতে প্রতিটি দেশের স্বাক্ষর করা জরুরি।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস)-এ সর্বাত্মক পারমাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধকরণ চুক্তির বাস্তবায়নের গুরুত্ব নিয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ল্যাসিনা জারবো।

বিআইআইএসএস’র বোর্ড অব গভর্নরসের চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইআইএসএস-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম আবদুর রহমান। এ ছাড়া ঢাকায় বিভিন্ন দূতাবাস ও মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, সাবেক কূটনীতিক এবং বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়ে ল্যাসিনা জারবো বলেন, বাংলাদেশ গত বছর পরমাণু অস্ত্র নিরোধ চুক্তিতে স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ এশিয়া এবং পৃথিবীর শান্তি নিশ্চিতে দেশটি কাজ করে যাচ্ছে। ভারত এবং পাকিস্তান পরমাণু অস্ত্র নিরোধ চুক্তিতে এখনও স্বাক্ষর করেনি। এশিয়ার এই দুইটি দেশের অবস্থান এখনও উত্তর কোরিয়ার মতো।

Advertisement

সিটিবিটিও নির্বাহী বলেন, পারমাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধকরণ চুক্তি সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সংস্থা সিটিবিটিও নিয়ে মানুষের মধ্যে ভুল ধারণা রয়েছে। অথচ সিটিবিটিও বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক পরীক্ষা বন্ধ করতে কাজ করে যাচ্ছে। বৈশ্বিক উন্নয়নমূলক যে সব কর্মকাণ্ডে পরমাণু শক্তির ব্যবহার করা হয় তা যথাযথ নিয়ম মেনে করা হচ্ছে কিনা এবং মানব কল্যাণের জন্য তা কতটুকু ঝুঁকিপূর্ণ এসব বিষয় বৈজ্ঞানিকভাবে তদারকি করে থাকে।

ল্যাসিনা জারবো বলেন, সবাই একটি প্রশ্ন করে যে পৃথিবীতে ৫টি দেশকে কীভাবে পরমাণু শক্তির অধিকারি হতে দেয়া হল এবং বাকি দেশগুলোকে পরমাণু শক্তির অধিকারি হতে দেয়া হচ্ছে না কেন? এক্ষেত্রে বাস্তবতা হচ্ছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপট। যখন পৃথিবীর সর্বত্রই অসন্তোষ চলছিল এবং সকলেই পরমাণু শক্তির অধিকারি হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিল। তখন বোধদয় হল যে এভাবে গোলা-বারুদ নিয়ে ক্ষমতাশালী হওয়ার চেষ্টা চালালে পৃথিবী ধ্বঃস হয়ে যাবে। এভাবে ৫টি দেশ নিজেদের মধ্যে সমঝোতায় আসল এবং প্রতিজ্ঞা করল যে তারা নিজেরাও পরমানু অস্ত্র ব্যবহার করবে না এবং অন্য কোনো রাষ্ট্রও যাতে এই ধ্বংসাত্মক কাজে জড়িয়ে না পড়ে সে বিষয়টিও নিশ্চিত করা।

তিনদিনের সফরে গতকাল ঢাকায় আসেন সিটিবিটিও নির্বাহী। ২০১৩ সালের ১ আগস্ট দায়িত্ব গ্রহণের পর এখন দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্বে আছেন তিনি। আর এটাই ছিল জারবোর প্রথম বাংলাদেশ সফর।

বাংলাদেশ গতবছরের ২০ সেপ্টেম্বর পরমাণু অস্ত্র নিরোধ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এছাড়া বাংলাদেশ প্রায় সকল বৈশ্বিক নিরস্ত্রীকরণ সংক্রান্ত চুক্তির ক্ষেত্রে স্বাক্ষরকারী দেশ। সফর শেষে ৬ অক্টোবর জাপানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন ল্যাসিনা জারবো।

Advertisement

জেপি/জেএইচ/এমএস