পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে এবার রাজবাড়ীর নদী তীরবর্তী বসতবাড়ি ও ফসলি জমি বিলীন হতে শুরু করেছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
Advertisement
জেলার কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের হড়িণবাড়ীয়া এমনই একটি এলাকা। এ এলাকার প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকার বসতবাড়ী ও ফসলি জমি এবার পদ্মায় বিলীন হয়েছে। এতে উপজেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়াসহ নিঃস্ব হয়ে পড়েছে বহু পরিবার।
মাথা গোঁজার আশ্রয়স্থল ও ফসলি জমি হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে অন্যের জমিতে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন এসব পরিবার। রান্না ও থাকা খাওয়ার স্থান একই। এখন পর্যন্ত ২০ কেজি চাল ছাড়া পাননি কোনো সুবিধাই।
এছাড়া উপজেলা শহরে যাওয়ার একমাত্র ইটের ব্রিক সোলিং রাস্তাটিরও বেহাল দশা। নদীর পানি রাস্তা থেকে নেমে যাওয়ায় ইটগুলো সরে গিয়েছে। হেঁটে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় আর নেই। ওই অঞ্চলে কোনো বাজার বা ভাল দোকান না থাকায় বাজার সদাই করতে না পেরে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী।
Advertisement
এদিকে ভাঙন রয়েছে জেলার পাংশা উপজেলার হাবাসপুর, কালুখালী কালিকাপুর, রতনদিয়া, সদরের মিজানপুর, গোয়ালন্দের ছোট ভাকলা, দেঊগ্রাম ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নেও। এসব ইউনিয়নের মোট ১৯টি স্থানে ভাঙন রয়েছে কিন্তু ভাঙন রোধে মাত্র কয়েকটি স্থানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, কিছুদিন আগে নদীতে যে ড্রেজিং করা হয়েছে সে কারণেই এবার ভাঙন হয়েছে।
কালুখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজী সাইফুল ইসলাম জানান, কালুখালীর রতনদিয়ায় এবার ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ওই এলাকার প্রস্তাবিত রাজবাড়ী সেনানিবাসের সেনা ছাউনী, হেলিপ্যাড এবং প্রেসিডেন্ট হাউস নামক স্থানটি নদীগর্ভে চলে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ২ হাজার পরিবারের মাঝে রিলিফ কার্যক্রম চালু করাসহ অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করছেন।
রূপপুর পারমানবিক প্রকল্প চালু রাখতে নদীতে যে ড্রেজিং করা হয়েছে, তার কারণেই জেলার বিভিন্ন স্থানে এ ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদী ভাঙন থেকে রাজবাড়ীবাসীকে রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগ নেবেন বলে তিনি মনে করেন।
Advertisement
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক মো. শওকত আলী জানান, রাজবাড়ী পদ্মা ও গড়াই নদী ভাঙন কবলিত এলাকা। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য যে ১৭৫ মেট্রিক টন চাল এসেছিল ইতোমধ্যে তা বিতরণ করা হয়েছে।
এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর নির্মাণের জন্য ৬শ বান্ডেল ঢেউটিন ও বান্ডেল প্রতি ৩ হাজার করে মোট ১৮ লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে। মন্ত্রণালয়ে আরো ৮শ বান্ডেল টিন ও ২৪ লাখ টাকা চেয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ভাঙন কবলিতদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে।
রুবেলুর রহমান/এফএ/পিআর