ক্যাম্পাস

বাসের চালক-হেলপারকে মারধর করল ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়া করা বাসের চালক এবং হেলপারের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত করেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

Advertisement

সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঝিনাইদহ শহরের সার্কিট হাউসের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নির্দিষ্ট স্থানে না নামিয়ে দেয়ায় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমানের কর্মীরা ওই বাসের চালক ও হেলপারের ওপর হামলা চালায়।

হামলায় গুরুতর আহত হন বাসের হেলপার শিপন আলম। প্রথমে তাকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ঝিনাইদহ-ক্যাম্পাস রুটে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গাড়ি বন্ধ করে দিয়েছে ঝিনাইদহের পরিবহন শ্রমিক নেতারা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ক্যাম্পাস থেকে ছেড়ে আসা ঝিনাইদহ রুটের শিক্ষার্থীদের বহনকারী আরণা নামের গাড়িটি আরাপপুর বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালে পেছনের গেট দিয়ে এক ছাত্রলীগ কর্মী গাড়িতে উঠে। কিছু দূর গিয়েই তাকে নামিয়ে দিতে বললে যথাস্থানে তাকে না নামিয়ে ১০০ মিটার সামনে গিয়ে গাড়ি থামে।

Advertisement

এতে ওই ছাত্রলীগ কর্মী ক্ষিপ্ত হয়ে গাড়ির হেলপার শিপন আলমকে মারধর করতে থাকে। এতে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হলে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে ওই ছাত্রলীগ কর্মী চলে যায়।

পরে বাসটি সার্কিট হাউসের সামনে পৌঁছালে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিনের গ্রুপের সাবেক কমিটির স্কুলছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মোস্তফার নেতৃত্বে ৬-৭ জন চালক ও হেলপারের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।

এ সময় তারা চালক মিন্টু মিয়াকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে গাড়ির চাবি কেড়ে নেয়। একই সঙ্গে তারা শিপনকে বেধড়ক মারধর করে। এতে শিপনের ঠোঁট ও কান ও মাথা ফেটে রাস্তায় পড়ে গেলে ছাত্রলীগ কর্মীরা চলে যায়। হামলার পর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে তাসলিমা ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হামলার বিষয়ে চালক মিন্টু মিয়া বলেন, আমরা গরিব মানুষ বলে সামান্য বিষয়েই আমাদের ওপর হামলা করা হয়। কোনোদিন এসবের বিচার হয় না। ওরা ড্রাইভারকে চড় মেরে চাবি নিয়ে গেছে। শিপনের অবস্থা খুব খারাপ। ওকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

Advertisement

এ ব্যাপারে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এদিকে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা হালিম বিষয়টি জানেন না বলে জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, এ ঘটনায় মালিক পক্ষ ক্ষুব্ধ হয়ে সন্ধ্যায় গাড়ি বন্ধ করে দিয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার ১১টার সময় মালিক পক্ষের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন অফিসে মিটিং হবে। দোষীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

ফেরদাউসুর রহমান সোহাগ/এএম/এমএস