আয় দলে, আয় বলে; জড়াবে বল জালে- পপ সম্রাজ্ঞী মমতাজ বেগমের কণ্ঠে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের থিম সং বেজেছে কিক অফের আগ পর্যন্ত। শেষ বাঁশির পর যখন আবার বেজে উঠলো গান তখন গ্যালারি থেকেও কন্ঠ মেলালেন অনেক দর্শক। পাশাপাশি করতালি আর বাংলাদেশ-বাংলাদেশ স্লোগানে লাল-সবুজ জার্সিধারীদের অভিনন্দন জানালো তারা।
Advertisement
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ঘিরে ফুটবল উৎসবের নগরীতে পরিণত সিলেট। চারিদিকে নানা আয়োজন হলেও সবার চোখ ছিল জাতীয় দলের দিকে। মাঠে ফল না আসলে সব উৎসবই যে মাটি হয়ে যেতো। বিপলু আহমেদ-জামাল ভূঁইয়ারা বৃথা যেতে দেয়নি কোনো উচ্ছ্বাস। উদ্বোধনী ম্যাচ জিতে উৎসব রাঙিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল।
আর সেই রঙটা ছাড়ালেন বিপলু আহমেদ নামের তরুণ এক ফুটবলার। মাঝমাঠের কুশলী এ তরুণই টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী দিনটা স্মরণীয় করে রাখলেন ক্যারিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক গোল করে। এশিয়ান গেমসের পর সাফ সুজুকি কাপেও দুর্দান্ত খেলেছেন সিলেটের এ তরুণ। ঘরের মাঠে বিপলু গোল করে বাড়তি আনন্দ দিয়েছেন সিলেটের দর্শকদের। শুধু গোলই করেননি, মাঝ মাঠে বিপলু খেলেছেনও দুর্দান্ত। স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন ম্যাচসেরা পুরস্কার।
ম্যাচের পর বিপলু আহমেদ বলেন,‘আমি এ মাঠে অনেক খেলেছি। নিজেদের মাঠে গোল করে দেশকে জেতাতে পেরেছি। অনেক ভালো লাগছে।’ স্ট্রাইকার নাবীব নেওয়াজ জীবন বলেন,‘আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি ম্যাচ জিততে। আমাদের জন্য প্রথম ম্যাচটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। জিতেছি, ভালো লাগছে।’
Advertisement
সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের ২৫ হাজার ধারণক্ষম গ্যালারি ভরিয়ে দিয়েছিল দর্শকরা। ভরা গ্যালারি থেকে বারবারই দীর্ঘনি:শ্বাস পড়েছে যখন একের পর এক সুযোগ নষ্ট করছিল বাংলাদেশ। প্রথমার্ধে বাংলাদেশের গোল না পাওয়া ছিল আক্রমনভাগের খেলোয়াড়দের চরম ব্যর্থতা। ম্যাচ বের করতে না পারলে দর্শকদের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতো সুফিল-জীবনদের।
বাংলাদেশ ম্যাচ শুরু করেছিল আক্রমণাত্মক ছকে। শুরু থেকে লাওসের উপর চড়াও হয়েই খেলতে থাকে স্বাগতিক দলের খেলোয়াড়রা। মাঝমাঠে প্রাধান্য রেখে লাওসের অর্ধে বারবারই বল ছেড়েছিল দুই উইং থেকে। কিন্তু বাংলাদেশের ফুটবলে পুরোনো রোগ ফিনিশিংয়ের দূর্বলতায় ম্যাচ এগিয়ে যাচ্ছিল গোলশূন্যের দিকে। তবে স্বাগতিক ফুটবলররা শেষ পর্যন্ত হতাশ করেননি। প্রত্যাশিত জয়ে নিয়ে উল্লাস ছড়িয়ে দেয় সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে। যে উল্লাসের ঢেউ সিলেট থেকে ছড়িয়ে যায় দেশের প্রতিটি কোনায়।
তিন দলের গ্রুপ। প্রথম ম্যাচ জিতলে সেমিফাইনালের পথে এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশ- ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলের কোচ জেমি ডে বারবার সে কথাই বলছিলেন। শেষ পর্যন্ত তার লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। ৩ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছেড়ে শেষ চারের ওঠার সম্ভাবনা উজ্জ্বল করে রাখলো স্বাগতিক দল।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যাচ ৫ অক্টোবর খেলবে ফিলিপইনের বিরুদ্ধে। তার আগে বুধবার মুখোমুখি হবে লাওস ও ফিলিপাইন। ওই ম্যাচে ফিলিপাইন জিতলে বাংলাদেশ উঠে যাবে শেষ চারে। লাওস জিতলে শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রয়োজন হবে ড্র।
Advertisement
আরআই/এসএএস/এমএস