সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভা ঘিরে বিএনপির চার শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী। নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সোমবার (১ অক্টোবর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
Advertisement
রিজভী বলেন, গতকাল (৩০ সেপ্টেম্বর) বিএনপির জনসভা মহাসাগরে পরিণত হয়। চারদিক থেকে ধেয়ে আসা জনস্রোতে সোহরাওয়ার্দীর বিশাল প্রান্তর কানায় কানায় ভরে যায়। রমনা পার্কসহ আশপাশের রাস্তাঘাট, মোড় ও ফুটপাত মিটিং শুনতে আসা মানুষে ঠাসা ছিল। শাহবাগ, কাকরাইল, মৎস্যভবন এলাকা সংলগ্ন এলাকায়ও ছিল উর্মীমালার মতো জনতার ঢেউ। অথচ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, বিএনপির সমাবেশের উপস্থিতি প্রমাণ করে বিএনপির জনপ্রিয়তা কমেছে। এর উত্তরে নীরব হাসি ছাড়া আর কিইবা বলতে পারি।
আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্যে বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় কোষাগার ও বিপুল পরিমাণ চাঁদাবাজির টাকা খরচ করেও সমাবেশে মানুষ আনতে পারেন না। অথচ বিএনপির সমাবেশে পথে পথে সরকারি দলের বাধার মুখেও বিপুল মানুষের সমাগম হয়। এতে তারা হতাশ হয়ে প্রলাপ বকছেন। একতরফা নির্বাচনী বৈতরণি পার হতে আওয়ামী নেতারা কত তামাশা দেখাচ্ছেন, আর কত যে উদ্ভট কথা বলছেন তার শেষ নেই।’
তিনি বলেন, ‘দল হিসেবে আওয়ামী লীগের এখন হতভাগ্য দেউলিয়াগ্রস্ত রাজনীতি। সে জন্যই খাপছাড়া কথা বলছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। জনসভায় বিপুল সমাগম দেখে সরকারের কাঁপুনি ধরে গেছে, সে জন্যই বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক হারে গ্রেফতারকে সরকার রক্ষাকবচ মনে করছে। জনসভা শেষে দেখলাম, বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঔদ্ধত্য আক্রমণে গ্রেফতারের মহড়া। এ জনসভা ঘিরে বিএনপির চার শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘বিএনপির জনসভা ঘিরে ঢাকার ভিতরে ও আশপাশের বিভিন্ন পয়েন্টে গণপরিবহন বন্ধ করে দেয় ক্ষমতাসীন দলের সশস্ত্র নেতাকর্মীরা। বিএনপি নেতাকর্মীদের সন্দেহ করে পথে পথে বাধা দিয়েছে তারা। মারধরের ঘটনাও ঘটেছে বিভিন্ন স্থানে। সকাল থেকেই ঢাকা মহানগরীর প্রবেশ পথ আগলে রাখে পুলিশের পাশাপাশি আওয়ামী ক্যাডাররা। গত শনিবার রাত থেকেই ঢাকা মহানগরীসহ আশপাশের জেলাগুলোতে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় চলে পুলিশি তল্লাশী। ভোরেই আওয়ামী ক্যাডাররা বাস কাউন্টার থেকে কর্মচারী ও গাড়ি সরিয়ে দিয়ে সারাদিন বাস সার্ভিস বন্ধ রাখে। ঢাকা মহানগরীর নিকটবর্তী ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও পূর্বাচলে ৩০০ ফিট মহাসড়কে পুলিশের প্রটেকশনে চলে আওয়ামী ক্যাডারদের মোটরসাইকেল মহড়া। বিএনপির লোক সন্দেহে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে সাধারণ যাত্রীদের। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহ-দফতর সম্পাদক মুহাম্মদ মুনির হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কেএইচ/এনডিএস/জেআইএম
Advertisement