ক্যারিয়ারে সম্ভবত সবচেয়ে বাজে সময়টা পার করছেন পর্তুগিজ সুপার স্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। রিয়াল মাদ্রিদ থেকে জুভেন্টাসে আসার পর ম্যাচের পর ম্যাচ চলে যায়, গোলের দেখা পান না তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অহেতুক লাল কার্ড দেখে কান্না করতে করতে মাঠ থেকে বের হয়ে যাওয়া, কিংবা গত মৌসুমে সবারচেয়ে ভালো খেলেও ফিফা বর্ষসেরার পুরস্কার না জেতা- একটার পর একটা দুঃসংবাদ ঘিরেই রয়েছে তাকে।
Advertisement
অবশেষে সিআর সেভেনের বিরুদ্ধে এবার উঠলো ধর্ষণের অভিযোগ। ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন ক্যাথরিন মায়োরগা নামে ৩৩ বছর বয়সী এক মার্কিন নারী। ২০০৯ সালে নাকি লাস ভেগাসের একটি হোটেলে রোনালদো তাকে ধর্ষণ করেন। তবে, তার মুখ বন্ধ রাখার জন্য নাকি রোনালদো বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩ কোটিরও বেশি টাকা তাকে দিয়েছিলেন।
দীর্ঘ সময় পর এসে রোনালদোর নামে মামলাও ঠুকে দিয়েছেন মার্কিন ওই নারী। শুক্রবার ক্লার্ক কাউন্টির একটি আইনি প্রতিষ্ঠান এই তথ্য জানায় সিএনএনকে। তবে, আইনি প্রতিষ্ঠানটি আরও জানিয়েছে, রোনালদো নাকি এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, ‘তিনি স্যরি বলেছেন এবং সত্যিকারার্থেই তিনি একজন ভদ্রলোক।’
দীর্ঘ ৯ বছর পর জার্মান ম্যাগাজিন স্প্যাইজেলের কাছে সেই ঘটনার কথা স্বীকার করেন ক্যাথেরিন। জার্মান ম্যাগাজিনটির প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ২০০৯ সালের ১৩ জুন লাস ভেগাসের পালমস হোটেলের একটি নাইট ক্লাবে ক্যাথেরিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় রোনালদোর। সেখানে সিআর সেভেন উপস্থিত ছিলেন তার বোনের স্বামী এবং কাজিনের সঙ্গে। রোনালদোর বয়স তখন ২৪ এবং ম্যানইউ থেকে তার ৯৪ মিলিয়ন ইউরোর (তখনকার সময়ে সবচেয়ে দামি ফুটবলার) বিনিময়ে রিয়াল মাদ্রিদে যাওয়ার গুঞ্জনে তাকে নিয়ে বাজার গরম।
Advertisement
ওই সময় ক্যাথরিনের বয়স ছিল ২৫ বছর। নামি মডেল হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছিলেন। একই সঙ্গে কাজ করছিলেন সেই হোটেল বারে। সেখানে পরিচিত পর্ব শেষে নাকি রোনালদো ক্যাথেরিনকে তার সুইটে আমন্ত্রণ জানান। সেখানেই জোর করে মার্কিন ওই নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন সিআর সেভেন। ক্যাথেরিন চিৎকার করেও নাকি কারো সহযোগিতা পাননি তখন।
এরপর নাকি ক্যাথেরিনোর মুখ বন্ধ রাখার জন্য মোটা অংকের টাকা দেয়া হয়েছিল। এতদিন সেই টাকা এবং ভয়ের কারণে তিনি মুখ খোলেননি। প্রথমে নাকি পুলিশের কাছে যাওয়ার চিন্তা করেছিলেন তিনি। পরে লোক-লজ্জার ভয়ে আর আইনের আশ্রয় নেননি। যদিও নিজের জীবন থেকে নাকি ঘটনাটা কোনোভাবেই আড়াল করতে পারছিলেন না। অবশেষে ৯ বছর পর আউট অফ দ্য কোর্ট সেই বোঝাপড়া নিয়েই এখন প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন মার্কিন নারি। বিতর্কিত এই খবর প্রকাশের কারণে রোনালদোর আইনজীবী জার্মানি ম্যাগাজিনটির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়ে রাখছেন।
ম্যাগাজিন কতৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে, খবর প্রকাশের অনেক আগে থেকে অভিযোগকারিণীর বক্তব্যের ভিত্তিতে রোনালদোর সঙ্গে এ নিয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছেন তারা। তবে জুভেন্টাসের এই তারকা ফুটবলার বা তার আইনজীবী এ বিষয়ে কোনোরকম উত্তর না দেয়ায় সংবাদ প্রকাশে বাধা অনুভব করেনি তারা।
অন্যদিকে ধর্ষণের অভিযোগকে ‘ভূয়া সংবাদ’ বলে চিহ্নিত করলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। তার নামে অভিযোগে এনে ওই নারী নিজেকে প্রচারের আলোয় আনাই উদ্দেশ্য বলে জানিয়ে দিলেন তিনি। অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে চিহ্নিত করে তিনি ইনস্টাগ্রামে এক লাইভ ভিডিওতে বক্তব্য দিয়েছেন।
Advertisement
সেই ভিডিওতে একগাল হেসে রোনালদো বলেছেন, ‘না, না, না, না। যা বলা হচ্ছে, তা ভূয়া নিউজ। আমার নাম ব্যবহার করে প্রচারের আলোয় আসাই তার উদ্দেশ্য। এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। আমার নাম বলে ওরা বিখ্যাত হতে চাইছে। তবে আমি খুশি আছি। সব ভালই আছে।’ ভিডিওতে খোশ মেজাজেই দেখা গেলো জুভেন্টাসে যোগ দেওয়া তারকাকে।
আইএইচএস/জেআইএম