একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কড়া নাড়ছে ঘরের দরজার। আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে দেশে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এককভাবে। দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ব্যানার-ফেস্টুন লাগিয়ে দোয়া কামনা করছেন।
Advertisement
তবে দেশে আরও রাজনৈতিক দল থাকলেও নির্বাচনী মাঠে তাদের উপস্থিতি তেমন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ফলে নির্বাচনী মাঠে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোনো দলের কার্যক্রম চোখে পড়ছে না। আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা ভোটকে কেন্দ্র করে সারাদেশেই কোনো না কোনো কর্মসূচি পালন করছে।
এদিকে বিএনপি রোববার তাদের সমাবেশে আন্দোলনের জন্য কর্মসূচি ঘোষণা করলেও নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা বা নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেনি। যে কারণে বিএনপির নেতাকর্মী বা তাদের শরিকরা নির্বাচনী মাঠে নেই বললেই চলে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর কাদেরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ উত্তরবঙ্গে ট্রেন যাত্র করেছে। এ সময় ১৭টি পয়েন্টে তারা নির্বাচনী সমাবেশ করেছে। এ ছাড়া এই সফরে কয়েকটি জেলার নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সুযোগ হয়েছে। এর পর সড়কপথে ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার পথে যেসব পথ সভা হয়েছে তাতে নেতাকর্মীদের মধ্যে খুব উৎসাহ-উদ্দীপনা জুগিয়েছে। এ সফরে সংশ্লিষ্ট এলাকার সম্ভাব্য প্রার্থীরা পার্টির সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলে যার যার নির্বাচনী এলাকায় প্রচার প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন।
Advertisement
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী প্রচারণায় আগে থেকেই এগিয়ে আছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলের নেতারাও সংশ্লিষ্ট এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে। কিন্তু দেশের আরেকটি বৃহৎ দল বিএনপি নির্বাচনের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত না দেয়ায় বিএনপি অথবা বিএনপির জোটের শরিকরা এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। ফলে তারা মাঠেও যেতে পারছে না। জনগণকে তারা ভোটের ব্যাপারে কিছু বলতেও পারছে না। বিএনপির নেতাকর্মীরা অনেকেই বলছেন, নির্বাচনের সিদ্ধান্ত না নেয়ায় প্রচার-প্রচারণায় পিছিয়ে যাচ্ছে বিএনপি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, উত্তরবঙ্গ এবং কক্সবাজার সফর করে এসে আত্মবিশ্বাস অনেকটা বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, আমরা দেশের উত্তরবঙ্গে রেলযাত্রা ও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সাংগঠনিক সফর করেছি। ট্রেনযাত্রা ও সাংগঠনিক সফরের সময় পথসভাগুলো বিশাল সমাবেশের রূপ নিয়েছে। এত বড় বড় সমাবেশ হওয়ার পরও কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি।
কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের ওই দুটি কর্মসূচি পালনের সময় দিনাজপুরের বিরামপুরে ও কক্সবাজারের চকরিয়ার সমাবেশে যে জনসমাগম হয়েছে বিএনপির সোহরাওয়াদী উদ্যানের কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতেও তা হয়নি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির সমাবেশে জনগণের উপস্থিতি দেখে মনে হয়েছে জনগণ তাদের সঙ্গে নেই। দলটি ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। নেতিবাচক রাজনীতির জন্য বিএনপির তার জনসমর্থন হারিয়ে ফেলেছে।
Advertisement
আজ সোমবার থেকে আওয়ামী লীগ ঢাকায় সপ্তাহব্যাপী গণসংযোগ কর্মসূচি শুরু করছে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকদের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় নেতারা প্রতিদিন চারটি ভাগে ভাগ হয়ে রাজধানীর তিনটি করে মোট ১২টি ওয়ার্ডে এ কর্মসূচি পালন শুরু হয়েছে।
নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী লেফটেনেন্ট কর্নেল (অব.) মুহম্মদ ফারুক খান জাগো নিউজকে বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমরা সারাদেশেই আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। লক্ষ্য একটাই, সেটা হলো নির্বাচন এবং আওয়ামী লীগের জয়। দলের প্রতিটি সংসদীয় আসনে দলের নেতারা যাচ্ছেন, বিভিন্ন সভা, সমাবেশ ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। স্থানীয় নেতাদের বলছেন, গত নয় বছরে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরতে। সাধারণ জনগণ যেন আবারও নৌকায় ভোট দেন সে আহ্বান জানানো হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আগামী নির্বাচনে দলের জয় নিশ্চিত করা এখন আমাদের প্রধান কর্তব্য। তাই সারাদেশে যে সাংগঠনিক সফর শুরু হয়েছে তা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত চলবে।
এফএইচএস/এমবিআর/জেআইএম