মারা গেছেন অনেক আগেই, অথচ তাদের নামে দিব্যি বরাদ্ধ হচ্ছে রেশনের চাল-গম। তা তুলেও নেয়া হচ্ছে। মাত্র তিন মাসে এরকমই প্রায় ৭ লাখ মৃত রেশন গ্রাহককে চিহ্নিত করেছে পশ্চিমবঙ্গের খাদ্য অধিদফতর। এতে বিপুল অর্থের অপচয় হচ্ছে রাজ্য সরকারের।
Advertisement
এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, মৃত রেশন গ্রাহকদের চিহ্নিতকরণে আরও জোর দেয়া হচ্ছে। ফলে এই সংখ্যা আরও বাড়বে। এই কাজের জন্য পৌর ও পঞ্চায়েত দফতরের আরও সাহায্য নেয়া হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট দুই দফতরের মন্ত্রীকে চিঠি দেয়া হবে।
কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক বর্তমান জানিয়েছে নিয়ম অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি মারা গেলে ডেথ সার্টিফিকেট পেতে তার রেশন কার্ড ফেরত দিতে হয়। রেশন ডিলারের মাধ্যমে পরিবারের সদস্যরা এই কার্ড ফেরত দিয়ে থাকেন।
কিন্তু রাজ্যের খাদ্য অধিদফতরের ধারণা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাড়ির লোকেরা রেশন কার্ড ফেরত দিলেও সেই তথ্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছায় না। ফলে মৃত ব্যক্তির নামেও যথারীতি রেশনের খাদ্যসামগ্রী বরাদ্দ হয়ে যাচ্ছে। আর এই অপকর্মে একশ্রেণির রেশন ডিলার জড়িত। মৃত ব্যক্তির নামে পরিবারের লোকেদের রেশন নেয়ার ঘটনা তুলনামূলকভাবে খুবই কম।
Advertisement
এ অবস্থায় মৃত রেশন গ্রাহকদের তথ্য পেতে প্রায় তিন মাস আগে রাজ্য খাদ্য অধিদফতর একটি নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকরের সিদ্ধান্ত নেয়। সে জন্য একটি নির্দেশিকাও জারি করে তারা। একটি প্রোফর্মা তৈরির লক্ষ্যে হাসপাতাল, নার্সিংহোম, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, পৌরসভা, পঞ্চায়েতসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি দফতরকে মৃতদের তালিকা পাঠাতে বলা হয়। এছাড়া জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে বিডিও ও পৌরসভায় নির্দেশিকা পাঠায় খাদ্য অধিদফতর।
সেই ব্যবস্থায় ইতোমধ্যে ফলও মিলতে শুরু করেছে। এ পর্যন্ত বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ৭ লাখ মৃত রেশন গ্রাহকের তথ্য খাদ্য অধিদফতরের কাছে এসেছে।
খাদ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তারা জান সাধারণ মানুষ যেন মৃত ব্যক্তিদের রেশন কার্ড বাতিলের জন্য এগিয়ে আসে। পরিবারের কোনো মৃত সদস্যের কার্ড ফেরত দিলে কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
এছাড়া কোনো ব্লকে যত মৃত রেশন গ্রাহক চিহ্নিত হবে, সেই ব্লকে সমসংখ্যক আবেদনকারীকে নতুন কার্ড দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
Advertisement
রেশনে সস্তায় খাদ্য সরবরাহ করতে বছরে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি ভর্তুকি দিতে হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে।
এমএমজেড/এমএস