জাতীয়

দূর হচ্ছে হাতিরঝিলের পানির দুর্গন্ধ

বিনোদন ও যাতায়াতে রাজধানীর হাতিরঝিল একটি অন্যতম সেরা প্রকল্প। ওয়াটার ট্যাক্সিসহ চক্রাকার বাস এ অঞ্চলের যাত্রীদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। কিন্তু এই লেকের পানির উৎকট গন্ধ অস্বস্তিতে ফেলে যাত্রীসহ বিনোদনপ্রেমীদের। এ নিয়ে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েও গন্ধ দূর করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয়ে নেয়া হচ্ছে নতুন প্রকল্প। সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত প্রকল্পের অনুমোদনও পায়। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এটা বাস্তবায়ন করবে।

Advertisement

প্রকল্পটি গ্রহণের আগে লেকের বিভিন্ন স্থানের পানির নমুনা সংগ্রহ করে জাপান ও অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো হয় পরীক্ষার জন্য। পরীক্ষাগারে হাতিরঝিলের পানিকে ভয়াবহ দূষিত বলে জানানো হয়।

হাতিরঝিলে ওয়াটার ট্যাক্সির জন্য জনপ্রিয় স্পট হচ্ছে গুলশান-১ সংলগ্ন গুদারাঘাট। এখান থেকে প্রতিদিন শত শত মানুষ কারওয়ানবাজার ও রামপুরায় যাতায়াত করে। এদের অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওয়াটার ট্যাক্সিতে ওঠার সময় সামান্য গন্ধ পাওয়া যায়। কারওয়ানবাজারের দিকে যত যাওয়া যায় দুর্গন্ধের তীব্রতা তত বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে অনেকে নাকে রুমাল চাপতেও বাধ্য হয়।

জানা গেছে, হাতিরঝিলে এই গন্ধ কমিয়ে আনতে পানি দূষণের প্রধান উৎস হিসেবে চিহ্নিত সোনারগাঁও হোটেলের পেছনের অংশে লেকের সংযোগ বন্ধ করা হবে। কারণ পান্থপথ বক্স কালভার্ট থেকে আসা বর্জ্য পুরো লেকে ছড়িয়ে পড়ে। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পাম্পের সাহায্যে এখানকার বর্জ্য অপসারণ করা হবে।

Advertisement

গৃহীত ‘হাতিরঝিল লেকের দূষিত পানি পরিশোধন’ প্রকল্পের মাধ্যমে বেশকিছু আধুনিক শোধনাগারসহ যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হবে। পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৪৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। চলতি বছরের ডিসেম্বরেই এটির কাজ শেষ করার চিন্তা রয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় দেশি-বিদেশি পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হবে। এর মাধ্যমে হাতিরঝিলের পানি শোধন প্রক্রিয়ার জন্য যথাযথ ও বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন করা হবে। এছাড়া পানি দূষণরোধে প্রকল্পের আওতায় প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, উপকরণ, মেশিন, কেমিক্যাল সংগ্রহ ও নির্ধারিত স্থানে একটি ওয়্যারহাউস করা হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সমন্বিত পরিশোধন প্রক্রিয়ায় উচ্চক্ষমতার কম্প্রেসার, লেকের তলদেশে প্রতিনিয়ত বায়ু সঞ্চালন ব্যবস্থা, পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে উন্নীতকরণ, পন্টুন বোটের সাহায্যে পানিতে একধরনের ওষুধ স্প্রে করা হবে। এছাড়া বায়োলজিক্যাল ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে পানির গুণগত মান উন্নয়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এ প্রকল্পের বিষয়ে সম্প্রতি পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, হাতিরঝিল লেকের পানি পরিশোধনের জন্য একটি সমন্বিত, সাশ্রয়ী ও টেকসই প্রতিকার কর্মপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এ-সংক্রান্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে লেকের পানি দুর্গন্ধ ও দূষণমুক্ত হবে। বিদেশে পাঠানো হাতিরঝিলের পানির নমুনার রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আশা করি, এ সমস্যার সমাধান হবে।

Advertisement

এমএ/বিএ/জেআইএম