লিটন দাসের এক আউট নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। বিতর্কটা হয়তো কিছুটা চেপে যেত, যদি বাংলাদেশ এশিয়া কাপের ফাইনালটায় সহজেই হেরে যেত। তেমনটা হয়নি। ভারতের বিপক্ষে তারা হেরেছে একেবারে শেষ বলে এসে। এমন হারের পর স্বভাবতই আফসোসটা আরও বেড়েছে-ইশ, লিটন আর দুই চারটা বল বেশি খেলতে পারলেও হয়তো ট্রফিটা জিতে যেতাম আমরা!
Advertisement
মাঠের খেলায় ভুল সিদ্ধান্ত হতেই পারে। তবে একটি ভুল সিদ্ধান্ত অনেক সময় পুরো ম্যাচের জয় পরাজয়ের নির্ণায়ক হয়ে দাঁড়ায়। লিটন যদি সত্যিই ভুল সিদ্ধান্তে আউট হয়ে থাকেন কিংবা পক্ষপাতিত্বের শিকার হয়ে থাকেন, তবে তো আফসোস থাকবেই। থাকারও কথা।
এবার আসল প্রসঙ্গে আসা যাক। স্ট্যাম্পিংয়ে আউট হওয়া লিটন পক্ষপাতিত্বের শিকার হয়েছেন কি না, সেই প্রশ্ন উঠা একেবারে অবান্তর নয়। মহেন্দ্র সিং ধোনি বিজলী গতিতে স্ট্যাম্পিং করার পর প্রথম বা দ্বিতীয় আম্পায়ার আউটটি দেননি, পাঠানো হয়েছিল তৃতীয় আম্পায়ার রড টাকারের কাছে।
রড টাকারও এক দুইবার দেখে সিদ্ধান্তটি নিতে পারেননি। বার কয়েক জুম করা হয়, আবার টেনে টেনে দেখা হয়। তিনি যেন পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারছিলেন না। মনে সংশয় ছিল। ক্রিকেটে 'বেনিফিট অব ডাউট' বলে একটা কথা আছে। যদি কোনো আউট পরিষ্কারভাবে বোঝা না যায়, সেক্ষেত্রে সেটা ব্যাটসম্যানের পক্ষে যায়।
Advertisement
এই আইনে অবশ্যই লিটনের পক্ষে সিদ্ধান্তটা আসার কথা ছিল। এই জায়গায় পক্ষপাতিত্বের একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তবে আম্পায়ার যে আসলেই দ্বিধাগ্রস্থ ছিলেন, তার মনে সন্দেহ ছিল, সেটা সবাই আন্দাজ করতে পারলেও প্রমাণসাপেক্ষে বলা যায় না। স্বভাবতই তখন চলে আসে আরেকটি হিসেব। সন্দেহ-সংশয় বাদ দিলে ক্রিকেটীয় আইন আসলে এই আউটের ব্যাপারে কি বলে?
আইনের ধারায় গেলে অবশ্য লিটনের এই আউটটি নিয়ে প্রশ্ন তোলার উপায় নেই। ক্রিকেটের আইনের ৩৯তম ধারায় স্ট্যাম্পিং সম্পর্কে বলা হয়েছে, 'একজন ব্যাটসম্যান আউট হবেন, যদি ক্রিজের বাইরে থাকেন এবং সেটা রান নেয়ার চেষ্টাতে নয়।'
এই আইনের ব্যাখ্যায় ক্রিজের বাইরে থাকা সম্পর্কে বলা আছে, 'ব্যাটসম্যানের শরীর বা তার ব্যাটের কোনো অংশ ক্রিজের মধ্যে মাটিতে স্পর্শ না করা। যদি তার ব্যাট একটুখানিও মাটি থেকে উঁচু হয়ে থাকে, ক্রিজের পেছনে থাকা সত্ত্বেও কিংবা যদি তার পা ক্রিজের লাইনের মধ্যে থাকে, কিন্তু সেটা পুরোপুরি লাইন ক্রস না করে এবং পেছনের মাটি স্পর্শ না করে, তবে তিনি আউট হবেন।'
এই আইন অনুযায়ী, লিটন দাস অবশ্যই আউট ছিলেন। তবে তৃতীয় আম্পায়ার বারবার জুম করে আউটটা দেখার চেষ্টা করাতেই অন্য বিতর্কটা তৈরি হয়েছে-সন্দেহ থাকলে তো সেটা ব্যাটসম্যানের পক্ষেই যাওয়ার কথা!
Advertisement
এমএমআর/জেআইএম