‘নামাজের জন্য মসজিদ অপরিহার্য নয়’ ১৯৯৪ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়। সে বছর সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ড ইন্ডিয়া সাংবিধানিক বেঞ্চে এ বিচারের রায়ের আবেদন করে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ড ইন্ডিয়ার সে আবেদন খারিক করে দেয়।
Advertisement
এ প্রসঙ্গে ভারতের ‘নিখিল ভারত মজলিশ-ই ইত্তেহাদুল মুসলেমিন (মিম)’-এর প্রধান ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এমপি প্রশ্ন রেখে বলেছেন- ‘নামাজের জন্য মসজিদ প্রয়োজন কিনা তা আদালত কিভাবে ঠিক করতে পারে?’
ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি তার মন্তব্যে বলেন, যদি বিষয়টি সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠানো হতো তাহলে ভালো হতো। কারণ ইসলামে মসজিদ একটি জরুরি অংশ। কুরআন ও হাদিসে মসজিদের উল্লেখ আছে। মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ার কথা বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এর আগে ‘তিন তালাক’ ইস্যুতে বিচারপতি কুরিয়েন বলেছিলেন, তিন তালাকের বিষয়টি কুরআনে নেই। দুঃখজনক বিষয় হলো, যখন তিন তালাকের বিষয় সামনে এল তখন কুরআনের উল্লেখ করা হলো কিন্তু যখন মসজিদের বিষয়টি সামনে এল তখন কুরআনকে ভুলে যাওয়া হচ্ছে!’
Advertisement
অন্য ধর্মের ধর্মস্থান কী প্রয়োজনীয় নয়? ধর্মীয় বিষয়ে আদালত কীভাবে ঠিক করতে পারে কোনটা জরুরি? এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার ধর্মীয়গুরুদের রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ভারতের সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বিচারপতির সমন্বিত বেঞ্চের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র এবং বিচারপতি অশোক ভূষণ ওই রায় দিলেও বিচারপতি এস আব্দুল নাজির ভিন্ন মত পোষণ করেছেন।
বিচারপতি এস আব্দুল নাজির ভিন্ন মত পোষণ করে বলেছেন, ‘সজিদ নামাজের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ কী না তা বিচারের জন্য পাঁচ সদস্যের বিচারপতির বেঞ্চ গঠন করা উচিত।’
আরও পড়ুন > ভারতের স্কুলে কুরআন শিক্ষার প্রস্তাব করেছেন মেনেকা গান্ধী
Advertisement
উল্লেখ্য যে, ১৯৯৪ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর ইসমাইল ফারুকির করা মামলায় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, ‘সরকার মন্দির, মসজিদ, গির্জা সবই অধিগ্রহণ করতে পারে, যদি সংশ্লিষ্ট ধর্মে তার আলাদা কোনো তাৎপর্য না থাকে। মসজিদ ইসলামের অপরিহার্য অংশ নয়। কারণ নামাজ যে কোনো জায়গাতেই পড়া যেতে পারে।’
সে সময় সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ড ইন্ডিয়াসহ মুসলিম সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে বৃহত্তর (সাংবিধানিক) বেঞ্চে ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানো হয়েছিল।
কিন্তু ভারতের সুপ্রিম কোর্ট গত ২৭ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) এ সংক্রান্ত মামলাটি সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠানোর দাবি খারিজ করে দিয়ে আগের রায়ই বহাল রেখেছে।
এমএমএস/এমএস