দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভির বিভ্রান্তিমূলক মন্তব্যের জেরে বিশ্বব্যাপী আলেম-ওলামাদের মাঝে দ্বীনি অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। মাওলানা সাদ কান্ধলভিতে দাওয়াতে দ্বীনের পথে রুজু করতে দেওবন্দসহ বিশ্ব আলেম-ওলামাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। বাংলাদেশে মাওলানা সাদ সাহেবের অনুসরনের তাবলিগের কিছু লোক কাজ করে চলছে।
Advertisement
তাবলিগ জামাতের দাওয়াতে দ্বীনের কাজকে গতিশীল ও তরান্বিত করতে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় ৫টি নির্দেশনা দিয়ে একটি পরিপত্র জারি করে। আবার কারণ উল্লেখ ছাড়াই ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় তাদের জারি করা পরিপত্র এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থগিত করে।
বাংলাদেশের শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম তাবলিগ জামাতের চলমান পরিস্থিতিতে তাদের অবস্থান ও কর্মসূচি সুস্পষ্ট করার লক্ষ্যে রাজধানীর মিরপুরের ঐতিহাসিক হারুন মোল্লাহ ঈদগাহ মাঠে ওয়াজাহাতি জোড় অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এ জোড় সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে। জোহর পর্যন্ত এ জোড় চলবে বলে জানা গেছে। ঢাকাসহ পাশ্ববর্তী থানা ও জেলা এ জোড়ে তাবলিগের একনিষ্ঠ সাথী, আলেম, ছাত্র-শিক্ষক ও মুরব্বিগণ উপস্থিত হয়েছেন।
Advertisement
তাবলিগ জামাতে চলমান দ্বন্দ্ব নিরসণ, জনসাধারণ ও তাবলীগি সাথীদের মাঝে ভুল বুঝাবুঝি দূর করা এবং তাবলিগ জামাতের বিরোধ নিষ্পত্তিতে আজকের জোড়ে আলেমগণ তাদের অবস্থান সুস্পষ্ট করতে বয়ান পেশ করছেন।
আও পড়ুন > যেভাবে বাংলাদেশে বিশ্ব ইজতেমা শুরু হলো
হারুন মোল্লা মাঠের এ জোড়ে উপস্থিত হয়েছেন, কাকরাইল মারকাজের শুরা সদস্য মাওলানা যুবাইর আহমদ, জামিয়া রহমানিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহফুজুল হক, আরজাবাদ মাদরাসার পরিচালক মাওলানা বাহাউদ্দিন যাকারিয়া, শাইখ জাকারিয়া রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ, কাপাশিয়ার পীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, শাইখুল হাদিস মাওলানা সাজিদুর রহমান, উত্তরা আল মানহাল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা কেফায়েতুল্লাহ আজহারী, টঙ্গি দারুল উলুম মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মাসউদুল করিম প্রমুখ।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা আহমদ শফিসহ দেশের শীর্ষ আলেমদের সঙ্গে কাকরাইল মারকাজের শীর্ষ মুরব্বিদেরও উপস্থিত হয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট ও হেদায়েতি বয়ান পেশ করার কথা রয়েছে।
Advertisement
উলুম দেওবন্দেরর প্রখ্যাত আলেম মুফতি হাবিবুর রহমান খায়রাবাদীও এ জোড়ে বয়ান রাখার কথা রয়েছে।
এ জোড়ে আলেমদের বয়ানে একটি সুস্পষ্ট ভাষায় ওঠে এসেছে যে, তাবলিগ জামাতের বয়ান, আমল, তালিম, মশওয়ারা কোনো কিছুতেই আমির নিযুক্ত নেই। এমনকি বিশ্ব ইজতেমায় কে বয়ান করবেন আর কে ইমামতি ও মুনাজাত করবেন তাও নির্ধারণ করা থাকে না।
যুগ যুগ ধরে এভাবেই চলে আসছে দাওয়াতে দ্বীনের মেহনতি সংগঠন তাবলিগ জামাত। হঠাৎ করেই দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভি বিতর্কিত নসিহত ও মন্তব্য এবং নিজেকে আমির দাবি করে বসে। যার প্রেক্ষিতে শুরু হয় তাবলিগের চলমান দ্বন্দ্ব ও সংকট।
যুগ যুগ ধরে যেভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে তাবলিগ জামাত। পূর্বের সে ধারা অনুযায়ী চলার বিষয়টি তুলে ধরতেই বাংলাদেশসহ দেওবন্দ ও বিশ্বব্যাপী আলেমগণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তাবলিগের কাজকে ফেতনামুক্ত রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আল্লাহ তাআলা আলেমদের সঠিক দিন নির্দেশনায় তাবলিগের কাজকে আঞ্জাম দেয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস