রোহিঙ্গা সংকট আন্তর্জাতিকীকরণের বিরোধী চীন। একথা জানিয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, এ সঙ্কটকে জটিল বা বিস্তৃত করা ঠিক হবে না।
Advertisement
এমন এক সময় মি ওয়াং ই একথা বললেন যখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটিতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা মুসলিমদের প্রত্যাবাসনের অগ্রগতির ব্যাপারে হতাশা প্রকাশ করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এক বক্তৃতা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবার কথা মিয়ানমার মৌখিকভাবে বললেও বাস্তবে তারা কোন কার্যকর ভূমিকা নিচ্ছে না।
চীনের পররাষ্ট্র দফতরের এক বিবৃতিতে শুক্রবার বলা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর মতে, রাখাইন প্রদেশের ইস্যুটি মূলত মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যেকার একটি সমস্যা। এ ইস্যুটিকে জটিল, বিস্তৃত বা আন্তর্জাতিকীকরণ হোক এতে চীনের সম্মতি নেই।
বিবৃতিতে বলা হয়, চীন মিয়ানমার এবং বাংলাদেশ রাখাইন প্রদেশের ওই ইস্যুটি যথাযথভাবে সমাধানের জন্য একটি চারদফা নীতিতে ঐকমত্যে উপনীত হয়েছে।
Advertisement
ওয়াং ই আশা প্রকাশ করেন যে দুটি দেশই আলোচনার মাধ্যমে অসুবিধাগুলো দূর করে একসাথে এর সমাধান বের করবে। রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন দ্রুততর করাটাই এখন সবচেয়ে জরুরি কাজ বলে উল্লেখ করেছেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এবং মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অফিসের মন্ত্রী কায়য়ো টিন সোয়ে।
এরপর চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে বলা হয়, চীন আশা করে, বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করবে। এ ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের যোগাযোগ রক্ষার প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে চীন।
এরই মধ্যে রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানোর সময় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করতে জাতিংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল যে উদ্যোগ নিয়েছে তার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে চীন।
Advertisement
গত এক বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম মিয়ানমার ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। রোহিঙ্গা সঙ্কট শুরুর প্রায় তিনমাস পর গত বছরের নভেম্বর মাসে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ঢাকা সফরে এসেছিলেন।
এর এক সপ্তাহের মধ্যেই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবার বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। ধারণা করা হচ্ছিল যে, চীনের চাপে পড়েই বাংলাদেশ সে সমঝোতা স্বাক্ষর করে।
এখন রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেবার বিষয়ে মিয়ানমার কোন কার্যকর ভূমিকা না নেয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
টিটিএন/এমএস