গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের (২৩ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর) মধ্যে তিন কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। এমন দরপতনের কারণে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্য সূচক কমেছ দুই শতাংশের ওপর।
Advertisement
মূল্য সূচকের পাশাপাশি কমেছে বাজার মূলধন। আগের সপ্তাহের তুলনায় ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ২৬ শতাংশের ওপরে। আর সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা। এ নিয়ে টানা তিন সপ্তাহের পতনে ১০ হাজার কোটি টাকা বাজার মূলধন হারালো ডিএসই।
বড় অঙ্কের বাজার মূলধন কমার পাশাপাশি গত সপ্তাহজুড়েই ডিএসইর সবকটি মূল্য সূচকের পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম। পাশাপাশি কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৮৫ হাজার ৯২৭ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল তিন লাখ ৮৯ হাজার ৮২১ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে তিন হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা।
Advertisement
এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১২৪ দশমিক ১৬ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ৩৩ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৬১ শতাংশ এবং তার আগের সপ্তাহে কমে ৭৩ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৩২ শতাংশ। অর্থাৎ টানা তিন সপ্তাহের পতনে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক কমেছে ২৩১ পয়েন্ট।
অপর দুটি সূচকের মধ্যে গত সপ্তাহে ডিএসই-৩০ আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে ১৬ দশমিক ১৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৮৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ১৮ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং তার আগের সপ্তাহে কমে ৩৮ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক কমেছে ২৫ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট বা ২ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ১৫ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং তার আগের সপ্তাহে কমে ৭ দশমিক ২৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৭ শতাংশ।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৪০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে ৭১টির দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। দাম কমেছে ২৫৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১২টির দাম।
Advertisement
এদিকে সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫৬৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৭৭৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ২০৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা বা ২৬ দশমিক ৬২ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ৮৪৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় তিন হাজার ৮৮৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে এক হাজার ৩৪ কোটি ৬ লাখ টাকা বা ২৬ দশমিক ৬২ শতাংশ।
গত সপ্তাহে মোট লেনদেনের ৯৪ দশমিক ২১ শতাংশই ছিল ‘এ’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের দখলে। এ ছাড়া বাকি দশমিক ৯০ শতাংশ ‘বি’ ক্যাটাগরিভুক্ত, ৩ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ ‘এন’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের এবং ১ দশমিক ৮৪ শতাংশ ‘জেড’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে খুলনা পাওয়ার কোম্পানির শেয়ার। কোম্পানিটির ২৫৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা সপ্তাহজুড়ে হওয়া মোট লেনদেনের ৮ দশমিক ৯১ শতাংশ।
দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৮১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা, যা সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ। ১৩৯ কোটি ৪৫ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইফাদ অটোস।
লেনদেনে এরপর রয়েছে- শাশা ডেনিমস, অ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যাল, বিবিএস কেবলস, ইনটেক লিমিটেড, ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং আমান ফিড।
এমএএস/এএইচ/পিআর