খেলাধুলা

ফাইনালে যতো চিন্তা রোহিত শর্মাকে নিয়ে

এশিয়া কাপ ফাইনালকে ঘিরে চারিদিকে এখন শোনা যাচ্ছে নানা মুনির নানা মত। তবে সব মুনিরই একটা সাধারণ মত ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশকে জিততে হলে দমিয়ে রাখতে এশিয়ার বর্তমান সেরাদের টপঅর্ডারকে। উইকেটে সেট হতে দেয়া যাবে না ভারতের উপরের সারির ব্যাটসম্যানদের।

Advertisement

নাম উল্লেখ করে বললে বলতে হবে রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, আম্বাতি রাইডুদের নাম। আরও স্পষ্ট করে আলোচনায় গেলে বাংলাদেশের বিপক্ষে আলাদা করে বলতেই হবে রোহিত শর্মার কথা। বাংলাদেশের বিপক্ষে যার অতীত পরিসংখ্যান বরাবরই বেশ ভালো।

চলতি এশিয়া কাপে ভারতের অপরাজিত থাকার পেছনে বড় অবদান রয়েছে রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ানের উদ্বোধনী জুটির। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকাতেও উপরের দিকেই রয়েছেন এ দুজন। ৪ ম্যাচে ৩২৭ রান নিয়ে সবার উপরে ধাওয়ান, সমান ২৬৯ রান করে ৩ নম্বরে রোহিত। মাঝে থাকা মুশফিকুর রহিমের রান ২৯৭।

তবে আলোচনা যখন আসবে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের ম্যাচের, তখন রোহিত শর্মার ব্যাপারে একটু নড়ে চড়ে বসতেই হবে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজম্যান্টকে। কষতে হবে আলাদা পরিকল্পনা।

Advertisement

টাইগারদের বিপক্ষে ভারতীয়দের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নতুন রূপ ধারণ করেছে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ থেকে। সে ম্যাচ দিয়েই বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজেকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যান রোহিত।

ম্যাচে আম্পায়ারদের নির্লজ্জ্ব চুরিতে আড়াল হয়ে যায় রোহিত শর্মার ১৩৭ রানের ঝকঝকে ইনিংসটি। এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের বিপক্ষে ১১টি ম্যাচ খেলেছেন রোহিত। যার মধ্যে ৫টি খেলেছেন সেই কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের আগে। ওই ৫ ম্যাচে তিনি করতে পারেননি কিছুই। ৫ ম্যাচে মোট রান ছিল ৭৩, সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল ২৬ রানের।

কিন্তু ২০১৫ সালের সে বিতর্কিত কোয়ার্টার ফাইনালই বদলে দেয় সকল হিসেব-নিকেশ। টাইগারদের বিপক্ষে নিজের রুদ্রমূর্তির প্রকাশ ঘটান রোহিত। সে ম্যাচের পর থেকে বাংলাদেশকে পেলেই নিজের সেরা ক্রিকেট খেলেন রোহিত।

বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশের স্বপ্ন ধূলিসাৎ করা রোহিত নিস্তার দেননি ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনাল ম্যাচেও। সে ম্যাচেও তার ব্যাট থেকে আসে ১২৩ রানের অপরাজিত ইনিংস। অর্থাৎ বাংলাদেশের বিপক্ষে নকআউট ম্যাচ হলেই যেনো সেঞ্চুরির ভুত চাপে রোহিতের ব্যাটে।

Advertisement

২০১৫ সালের বিশ্বকাপের সে সেঞ্চুরিসহ বাংলাদেশের বিপক্ষে সবশেষ ছয় ম্যাচে রোহিত শর্মার রান ৪৩৫। গড়টা অতিমানবীয়! ১০৮.৭৫। চলতি এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচেও বাংলাদেশের বিপক্ষে ৭ উইকেটের জয়ে ৮৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন রোহিত।

এছাড়াও ১৮৭ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে রোহিতের মোট রান ৭০১৭, গড়টা ৪৬.১৬। কিন্তু প্রতিপক্ষের নাম যখন বাংলাদেশ, তখন ১১ ম্যাচে তার রান ৫০৮। গড় প্রায় দশ বেশি, ৫৬.৪৪। এছাড়া রোহিতের ক্যারিয়ার স্ট্রাইকরেট যেখানে ৮৭.৪৫, সেখানে বাংলাদেশের বিপক্ষে তিনি খেলেন ৯০.৭১ গড়ে।

অর্থাৎ বাংলাদেশের বিপক্ষে রান করতে বেশিই ভালোবাসেন রোহিত। শুক্রবারের ফাইনালে বাংলাদেশ দলের প্রথমবারের মতো কোনো টুর্নামেন্টের শিরোপা জয়ের পথে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেন ভারতের বর্তমান অধিনায়ক। তাই যেকোনো মূল্যে জ্বলে ওঠার আগেই নিভিয়ে দিতে হবে রোহিতের ব্যাট।

এসএএস/এমএস