প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে তিন জনই হাঁটার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলেন। এবার সেই তিনজনই ফের চলার ক্ষমতা অর্জন করলেন।
Advertisement
২০১৩ থেকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত ছিলেন জেয়ার্ড ছিনক (২৯)। প্রথমবারের মতো চলার সক্ষমতা ফের ফিরে পেয়েছেন তিনি। ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ‘রিকানেক্ট’ নামের একটি বৈদ্যুতিক যন্ত্রের সাহায্যে জেয়ার্ডের মস্তিষ্কের সঙ্গে পায়ের নিউরোনের সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। শুধু হাঁটা বা উঠে দাঁড়ানোর কথা ভাবলেই তিনি তা করতে পারবেন।
জেয়ার্ডই একা নন, তার মতো আরো দুই রোগীর ক্ষেত্রেও এমন যুগান্তকারী পদ্ধতি প্রয়োগ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লুইভিল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। অপর দুই রোগী হলেন, ২৩ বছর বয়সী কেলি থমাস এবং ৩৫ বছরের জেফ মার্কি।
আরও পড়ুন : রেস্টুরেন্টে শিশু ধর্ষণ, প্রতিবাদে মুখর দক্ষিণ আফ্রিকা
Advertisement
বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, মেরুদণ্ডে কোনো আঘাতের জেরে কেউ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়লে তাকে আর সুস্থ করা সম্ভব নয়। তবে ক্রিস্টোফার ও ডানা রিভের এই ফাউন্ডেশন লাখ লাখ প্যারালাইজড মানুষকে সাহায্য করতে পারবে।
২০১৩ সালে এক দুর্ঘটনায় প্যারালাইজড হয়ে যান ছিনক। তার পাঁজর টুকরো টুকরো হয়ে যায়; ফুসফুস ও মেরুদণ্ড মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। মিনেসোটার রচেস্টারের মায়ো ক্লিনিকের চিকিৎসকরা তার সেই পাঁজর জুড়ে দিয়েছিলেন। তবে মস্তিষ্ক থেকে যে ইঙ্গিতের মাধ্যমে স্নায়ু কাজ করে চলতে বা হাঁটতে বলে সেটিই নষ্ট হয়ে যায়।
ফ্লোরিডার হোমোসাসার বাসিন্দা কেলি থমাসের গল্পও খানিকটা একই রকম। ২০১৪ সালে গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন তিনি। অন্যদিকে, মন্টানার হোয়াইটফিশের বাসিন্দা মার্কিও মাউন্টেন বাইকিং করতে গিয়ে আহত হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন : ভারতীয় বিমান বাহিনীর উপপ্রধান গুলিবিদ্ধ
Advertisement
সেই সময় মায়ো ক্লিনিকের চিকিৎসকরা তাদের সুস্থ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিলেন। এর পরই একসঙ্গে রিসার্চ শুরু করে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ, দ্য ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া লস অ্যাঞ্জেলস, কেন্টাকির লুইভিল বিশ্ববিদ্যালয় এবং ক্রিস্টোফার অ্যান্ড ডানা রিভ ফাউন্ডেশন।
২০১৬ সালে ছিনককে দিয়েই প্রথম ২২ সপ্তাহের পরীক্ষা শুরু করেন তারা। শুরু হয় নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা। এর পর তার শরীরের জখম স্থানের নিচে ইলেকট্রোড বসানো হয়। তারের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সঙ্গে সংযুক্তিকরণ করা হয়।
পুরো প্রক্রিয়া চালানোর জন্য টেলিভিশন রিমোটের মতো একটি যন্ত্র তৈরি করা হয়। এর সাহায্যে ভোল্টেজ কমানো এবং দাঁড়ানো বা চলার সিগন্যাল পৌঁছে যায়। মাত্র দু’সপ্তাহের মধ্যেই ছিনক হাঁটতে শুরু করেছেন।
এসআইএস/আরআইপি